যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার জহুরপুর ইউনিয়নের খাজুরা-কালীগঞ্জ মহাসড়কের পাশে মঙ্গলবার (১৬ জুন) ভোরে রাজিয়া খাতুন (২৪) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় সন্দেহজনক খুনি গৃহবধূর স্বামী ও যশোরের চুন্নু হত্যা মামলার প্রধান আসামি শহিদকে আটক করেছে পুলিশ।
রাজিয়া যশোর সদর উপজেলার পাগলাদাহ গ্রামের শহিদ বিশ্বাসের দ্বিতীয় স্ত্রী ও মণিরামপুর উপজেলার রসূলপুর গ্রামের জালাল উদ্দিনের মেয়ে।
নিহত গৃহবধূর স্বামী শহিদ জানান, স্ত্রী রাজিয়াকে নিয়ে উপজেলার একটি ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন তিনি। গভীর রাতে কয়েকজন লোক ভাটার কর্মচারী পরিচয়ে তার ঘরের দরজা খুলতে বলেন। দরজা খোলা মাত্রই ঘরে ঢুকে তাকে মারধর শুরু করেন তারা। জীবন বাঁচাতে দৌড়ে পাশের মাঠে পালিয়ে যান তিনি। এর দুই ঘণ্টা পর ভোরে ভাটার নৈশপ্রহরীকে নিয়ে ঘরে ঢুকলে তার স্ত্রীকে বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তিনি।
তিনি জানান, সম্প্রতি বাঘারপাড়া উপজেলার তৈলকুপ গ্রামে একটি ঘটনার প্রতিবাদ করায় তাকে হত্যার উদ্দেশে ১৫ থেকে ১৬ জন লোক এসে আমার ওপর হামলা চালান। আমি পালিয়ে যাওয়ায় দুর্বৃত্তরা তার দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে বলে দাবি করেন রাজিয়ার স্বামী শহীদ।
ইটভাটার নৈশপ্রহরী আবু তাহের বিশ্বাস জানান, ভোরে কাঁদা-পানি মাখা অবস্থায় শহীদ ভাটার অফিসে এসে আমাকে ডাকেন। শহীদের সঙ্গে গিয়ে দেখি তার স্ত্রীর মরদেহ ঘরের সামনে পড়ে রয়েছে। পরে আমি বিষয়টি ভাটার মালিককে ফোন করে জানিয়েছি।
খাজুরা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) জুম্মান খান বলেন, ভাটার মালিকের ফোন পেয়ে সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভাটার পশ্চিমে একটি ঘরের সামনে মাটিতে ওই গৃহবধূর মরদেহ পাওয়া যায়।
বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আল মামুন বলেন, নিহত গৃহবধূর স্বামী যশোরের চুন্নু হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন। দীর্ঘদিন ভারতে পালিয়ে থাকার পর গত এক বছর আগে দেশে ফেরেন ও বিভিন্ন ইটভাটায় কাজ করতেন। এলাকায় তার প্রতিপক্ষ রয়েছে।
তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন গৃহবধূর স্বামী শহীদকে আটক করা হয়েছে ও মামলার প্রস্তুতি চলছে।