তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের আহবানে তিস্তা নদীর মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে রবিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে ঘন্টা ব্যাপী বামতীরে বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্যদিকে একই সময় নদীর ডান তীরের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
তিস্তা রেলসেতু ও সড়কসেতু মাঝের বাঁধে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের লালমনিরহাট জেলা কমিটির সভাপতি গেরিলা লিডার ড. এস এম শফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি এ্যাড. চিত্ত রঞ্জন রায়, সাধারন সম্পাদক বাদশা আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান, সাংস্কৃতিক কর্মী মাখন লাল দাস, নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত জহুরুল ইসলাম, আব্দুল খালেক, গোলাম মাওলাসহ স্থানীয় ব্যক্তি বর্গ। এছাড়াও মানববন্ধনে আরশী নগর-এর শিল্পী শরিফা খাতুন তিস্তা নদীর উপর দুটি ভাওয়াইয়া গান পরিবেশন করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমরা ত্রাণ চাই না, তিস্তা নদী খনন চাই। মঙ্গার হাত থেকে রক্ষা করতে নদী খনন করে দুই তীর রক্ষাসহ বন্যা ও ভাঙনের হাত থেকে বাঁচাতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তাগণ তিস্তা মহাপরিকল্পনা হাতে নেওয়ায় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। এ সময় বক্তগণ আরো বলেন খরা, বন্যা ও নদী ভাঙ্গনে তিস্তা পাড়ের মানুষ দিশে হারা। নদী ভাঙ্গনের ফলে তিস্তা নদীর প্রস্থ ৫ থেকে ৮ কিলোমিটার কোথাও বা তার থেকেও বেশি। ফলে দুই পাড়ে লাখ লাখ মানুষ আবাদি জমিসহ বাড়ি ভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। তিস্তা নদী দ্বারা দুই পাড়ের মানুষ বর্ষাকালে বন্যায় এবং গ্রীষ্মকালে পানির অভাবে চাষাবাদ করতে পারে না। অপর দিকে তিস্তার উজানে ভারত এক তরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করায় নাব্যতা না থাকায় তিস্তা এখন মরা খালে পরিনত হয়েছে।
প্রধান মন্ত্রীর মহাপরিকল্পনায় গৃহীত ‘তিস্তা নদীর সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও পূর্নরুদ্ধার’ প্রকল্পে আওতায় তিস্তা নদীগর্ভে ড্রেজিং, পাড় সংস্কার ও বাঁধানো এবং ভূমি পনুরুদ্ধার করা হবে। তাছাড়াও এই প্রকল্পের আওতায় বাঁধ মেরামত করা হবে। নদী ড্রেজিং, অবকাঠামো নির্মানের ফলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, গ্রীষ্মকালে পানির সংকট দূর ও নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ হবে। তিস্তা থেকে সৃষ্ট শাখা নদী ও অন্যান্য নদীগুলোতে ড্রেজিং ও পাড় নির্মান করে পানি প্রবাহ সঠিক রাখা ও কৃষিকাজে ভূগর্ভস্থ পানির পরিবর্তে নদীর পানি ব্যবহার যাবে।
এই মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায় দোয়ানী, নিজগড্ডীমারী, ধুবনী, পারুলীয়া, ডাউয়াবাড়ী, হলদীবাড়ি, কিশামত নোহালী। কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, হাজিরহাট, কাকিনা, আউলিয়ারহাট, বাগেরহাট, মহিপুর সেতু। আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা এবং সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, কালমাটি, রাজপুর ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা সেতু সংগ্লন্ন এলাকাসহ নদী তীরবর্তী বিভিন্ন স্থান হাজার হাজার নারী-পুরুষ স্বতঃস্ফুর্তভাবে মানববন্ধনে অংশগ্রহন করেন।