করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে ১ দিন আগেই। সরকারি হিসেবে বাংলাদেশে আজ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত রোগীর মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০৫,৫৩৫ জনে। অশনাক্ত রোগীর পরিমাণ সংখ্যায় কতো হতে পারে তা নিয়ে চলছে নানারকম বিশ্লেষণ।
দেশের অন্য এলাকার তুলনায় ঢাকা মহানগরীতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হওয়ায় রাজধানীর ৪৫টি এলাকাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, ঘোষণা দেয়া হয়েছে লকডাউনের আওতায় আনার। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৭টি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৮ এলাকা রয়েছে।
লকডাউনের ঘোষণা দেয়া হলেও বাস্তবায়নে দেখা যাচ্ছে নানারকম সমন্বয়হীনতা। পদক্ষেপ কার্যকর করতে নেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি, দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের কাছে থেকে পাওয়া যাচ্ছে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত থেকে জানা যায় ঢাকা মহানগরীর যেসব এলাকায় প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে ৬০ জন বা তার অধিক মানুষের শরীরে করোনা শনাক্ত হবে, ওই এলাকাকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বা লাল এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।
৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর থেকে ক্রমাগত বাড়ছে করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। থমকে গেছে জনজীবন, আটকে গেছে অর্থনীতির চাকা, অনিশ্চয়তায় শিক্ষা কাঠামো।
সীমিত আকারে অফিস আদালতের কার্যক্রম চললেও স্থবির হয়ে আছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম।
প্রাইভেট ভার্সিটিগুলো নামেমাত্র অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষা নেয়ার কথা বলে উপস্থিত হয়েছে কাবলিওয়ালার বেশে। গোঁজামিল দিয়ে ক্লাস পরীক্ষা নিয়ে দিনে রাতে চাপ প্রয়োগ করছে সেমিস্টার ফি প্রদানের জন্য।
চাকরি হারাচ্ছে অসংখ্য মানুষ, বৃদ্ধি পাচ্ছে বেকারত্বের সংখ্যা। সংকটময় সময়ে পোশাক কারখানায় চলছে ছাঁটাই, দেয়া হচ্ছে বেতন বিহীন লম্বা ছুটি। আর তাই অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকেই ছাড়ছেন রাজধানী ঢাকা।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের হিসাবে, করোনার কারণে বাংলাদেশে চাকরি হারানোর তালিকায় যুক্ত হতে পারে অন্তত দেড় কোটি মানুষ।
আর এই দেড় কোটি মানুষ চাকরি হারানোর সাথে সাথে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে তাদের পরিবারের অন্য সদস্যরাও।
তখন হয়তো মুখে করোনা আতংক আর পেটে খুদার যন্ত্রণা নিয়ে অপেক্ষা করতে হবে মহামারি থেকে মুক্তির জন্য অথবা প্রহর গুণতে হবে মৃত্যুর নির্মম আলিঙ্গনের।