বর্তমানে মানুষের কাছে করোনা রোগী বললেই যেকোন যানবাহন বা মানুষ সর্বদায় মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে সেখানে মানবিক চিন্তা ধারায় এগিয়ে এসেছে কক্সবাজার পুলিশ। করোনা রোগীদের সেবায় ২৪ ঘন্টা ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করেছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ।ফোন করলেই যে কোন করোনা রোগীকে হাসপাতাল কিংবা গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছে এই অ্যাম্বুলেন্সটি।
মঙ্গলবার (১৬ জুন) দুপুরে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসটির আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন করেন জেলা পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন, বিপিএম।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করোনারোগীদের সেবায় পুলিশের চালু করা অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস সাধারণ লোকজনসহ সর্বমহলে সুনাম কুঁড়িয়েছে। দীর্ঘ কয়েকমাস ধরে কক্সবাজার জেলা শহরে লকডাউন চলমান থাকায় মানুষ একদিকে আর্থিক সংকটে ভুগছেন। অন্যদিকে করোনা রোগী বললে যানবাহন চালকদের অনিহা প্রকাশ আরো বেশি ভোগান্তিতে ফেলেছেন করোনা আক্রান্ত পরিবার গুলিকে। যা খুবই কষ্টদায়ক। ঠিক এই কঠিন মুর্হুতে কক্সবাজার জেলা পুলিশ মানবিক সেবা হিসেবে ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স চালু করায় অনেকটা স্বস্থি ফিরেছে সমস্যাগ্রস্থদের মাঝে।
উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন বলেন, “কেবলমাত্র করোনা রোগীদেরকে এই অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস সেবাটি দেওয়া হবে। এই সেবা পেতে করোনা রোগীর পরিবার থেকে পুলিশের ০১৭২৭-৬৬৬৬৬৬ নম্বর মোবাইল ফোন এবং ০৩৪১-৬৪০৪৮ নম্বর টিঅ্যান্ডটি ফোনে যোগাযোগ করতে হবে। ফোন ২টি ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে”।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম বলেন, মানুষের দুঃখ দুর্দশা এবং হতাশা দেখে এই মানবিক সেবাটি চালু করা হয়েছে। তৎমধ্যে দুইটি বিষয় আমাকে বেশি নাড়া দিয়েছে। একটি সম্প্রতি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান এক ব্যক্তি। পরে তার লাশ নেয়ার জন্য দীর্ঘ সময় কোন অ্যাম্বুলেন্স পাইনি।
অন্যটি রোববার (১২ জুন) স্থানীয় সাংবাদিক ও ক্রীড়াবীদ জিয়াউল করিমের স্ত্রী করোনা আক্রান্ত হওয়ায় চমেকে নিয়ে যেতে অ্যাম্বুলেন্স এর জন্য অনেক ভুগান্তিতে পড়তে হয়েছে। পরে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজের সামনে অ্যাম্বুলেন্সেই তিনি মারা যান। এই দুইটি ঘটনা থেকে জেলা পুলিশের সদস্যদের রেশন, পুলিশ কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত অনুদান এবং কয়েকজন প্রবাসী ব্যক্তির দানের অর্থ নিয়ে পুলিশ এমন উদ্যোগ হাতে নিয়েছে।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, সারা দেশের মধ্যে করোনার মহামারিতে কক্সবাজার চার নম্বরে রয়েছে। সুতারাং এই মহামারির বিষয়টি মাথায় রেখে কক্সবাজারবাসীকে সর্তক হতে হবে। অন্যথায় চলমান মৃত্যুর মিছিল থেকে কেউ রেহায় পাবেনা।