খাগড়াছড়ির শহর থেকে নাড়াইছড়ির দূরত্ব অন্তত ৪৫ কিলোমিটার। এটি জেলার সবচেয়ে দুর্গম এলাকা হিসেবে বিবেচিত হয়। নির্বাচনের সময় এখন কর্মকর্তারা যাতায়াত করেন হেলিকপ্টারে।
দেশের সীমান্তবর্তী এই এলাকায় গ্রামের সংখ্যা ১৪টি। এসব গ্রামে বসবাস করে ৫৬০ পরিবার। দীঘিনালার বাবুছড়া ইউনিয়নের নাড়াইছড়ি ওয়ার্ডের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ নেই। ধনপাতা থেকে হেঁটে নাড়াইছড়ির ‘উত্তর মাথায়’ (পাড়া) যেতে সময় লাগে প্রায় ১০ ঘণ্টা। দীর্ঘ পথ হাঁটলে ত্রাণ পেয়ে খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা।
শনিবার ধনপাতা এলাকায় ত্রাণ সহায়তা নিতে নাড়াইছড়ির ২ শতাধিক মানুষ ভিড় করে। দূরত্ব এবং দুর্গম এলাকা বিবেচনায় বিশেষ বরাদ্দ দেয় উপজেলা প্রশাসন। ৫০০ পরিবারের জন্য দেয়া হয় ১৫ টন চাল। এ ছাড়া আলু-তেলসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য দেয়া হয়। পরিবার প্রতি ৩০ কেজি চাল পেয়ে কিছুদিন হলেও স্বস্তিতে থাকবে দুর্গম এলাকার বাসিন্দারা।
নাড়াইছড়ি ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রীতিরঞ্জন চাকমা জানান, ধনপাতা থেকে নাড়াইছড়ির ‘দক্ষিণ মাথা’ হেঁটে যেতে সময় লাগে প্রায় ৪ ঘণ্টা। ‘দক্ষিণ মাথা’ থেকে নাড়াইছড়ি যেতে সময় লাগে আরও ৬ ঘণ্টা। উত্তর মাথার বাসিন্দাদের ত্রাণ নিয়ে পৌঁছাতে সময় লাগেবে ১০ ঘণ্টা। আসা-যাওয়ায় ২০ ঘণ্টা।
সুভাষ চাকমা নামে এক ব্যক্তি এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, ‘এই দুঃসময়ে উপজেলা প্রশাসনের ত্রাণ সহায়তা নাড়াইছড়ির মানুষ আজীবন মনে রাখবে। অতীতে কোনো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এই দুর্গম এলাকার মানুষের কষ্ট অনুধাবন করেনি। করোনাকালে এই সহায়তা পেয়ে ১৪ গ্রামের ৫ শতাধিক পরিবারের মানুষের খাদ্য সংকট দূর হয়েছে।’
দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ উল্ল্যাহ জানান, ‘নাড়াইছড়ি দীঘিনালার সবচেয়ে প্রত্যন্ত এলাকা। এখানে অন্তত ৫ শতাধিক পরিবারের বসবাস। দুর্গম এলাকার এ সব নিকটস্থ বাজারে আসতে সময় লাগে ৪ থেকে ১০ ঘণ্টা। দুর্গম এলাকা হওয়ায় যাতায়াতে অনেক সময় লাগে। সে কারণে নাড়াইছড়ির জন্য বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হয়। পরিবার প্রতি ১ বস্তা চাল দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ সব এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানো বেশ চ্যালেঞ্জিং। নৌকা এবং বাঁশের ভেলায় করে ত্রাণ নিয়ে গেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী তরুণদের সহায়তায় নাড়াইছড়ির প্রতিটি পরিবারকে আমরা বিশেষ বরাদ্দ পৌঁছে দিতে পেরেছি।’