বন্দর নগরী চট্টগ্রামে এক মাসের কারফিউ জারির দাবি তুলেছে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি। এক মাসের কারফিউর পাশাপাশি মহামারি করোনাভাইরাসকে রুখে দিতে সরকারের কাছে ১২টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে নগর বিএনপি।
রবিবার (৭ জুন) দুপুরে কাজীর দেউড়ির নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ে নগর বিএনপি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ দাবি জানান নগর বিএনপির সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের মেয়র পদপ্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন।
বিএনপির প্রস্তাবগুলো হল:
(১) চট্টগ্রামের একমাত্র সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট কোভিড হাসপাতালে উন্নীত করে মেডিকেলের মাঠে একটি আধুনিক ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করা।
(২) চট্টগ্রামের ৬ টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোকে দ্রুত কোভিড হাসপাতাল হিসাবে ঘোষণা করে কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা।
(৩) চট্টগ্রামের বন্দর হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল ও কর্পোরেট ইম্পেরিয়াল হাসপাতালকে পরিপূর্ণ কোভিড হাসপাতাল হিসেবে অতিদ্রুত করোনা চিকিৎসার উপযোগী করে তুলা।
(৪) যেসব বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে আইসিইউ সুবিধা আছে সেগুলো সরকার অধিগ্রহণ করে করোনা চিকিৎসার সুবিধার্থে ক্লিনিক মালিকদের সাথে বসে ডাক্তার ও কর্মচারীদের উপযুক্ত সম্মানী বাবদ মাসিক বাজেট প্রদান করা।
(৫) সমস্ত কমিউনিটি সেন্টারগুলোকে সরকারের আওতায় নিয়ে আইসোলেশন সেন্টার তৈরি করে চট্টগ্রামের ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের আইসোলেশন সেন্টার করার জন্য উদ্ভুদ্ধ করা।
(৬) চট্টগ্রামের স্থায়ী হাসপাতালগুলোতে অত্যন্ত স্বল্পতম সময়ে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইনের ব্যবস্থা করা।
(৭) প্রচুর পরিমানে অক্সিজেন সিলিন্ডার, পালস অক্সিমিটার, হাই-ফ্লো-অক্সিজেন ন্যাজল ক্যানুলা, অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর ও সি প্যাপ মেশিনের ব্যবস্থা করা।
(৮) সব ধরনের স্বাস্থ্যকর্মীদের স্বল্প মেয়াদী প্রশিক্ষণ দিয়ে অক্সিজেন চিকিৎসা দিতে সক্ষম করে তোলা।
(৯) সরকারি বেসরকারি চিকিৎসক ও মেডিকেল স্টাফদের সন্মানী ও ভাতা নিয়ে যে বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে তা দ্রুত নিরসন করা।
(১০) হাই সার্ভিলেন্স টিমের মাধ্যমে ঔষধ, নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্যাদি, অক্সিজেন সহ বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্থায় ব্যবহৃত সমস্ত সরঞ্জামাদি মনিটরিং করা এবং দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা।
(১১) আসন্ন বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে টোটাল জিডিপির ৩.৫% থেকে ৪% বরাদ্ধ দিয়ে টোটাল বাজেটের ১৩% থেকে ১৫% বরাদ্ধ ঘোষণা করা।
(১২) নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি করে পিসিআর টেস্টের পাশাপাশি র্যাপিড এন্টিবডি টেস্টের মাধ্যমে সর্বাধিক জনসাধারণকে করোনা পরীক্ষার আওতায় আনা এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে রিপোর্ট প্রদান করা।
করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে সরকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা অভিযোগ টেনে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘করোনার আগাম সংবাদ পাবার পরও তারা কোন ধরনের প্রস্তুতি নিতে পারেনি। যেখানে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ। পোশাক কারখানা ও দোকানপাট খুলে দিয়ে দেশকে করোনার ঝুঁকির মধ্যে ফেলার দায় সরকার কোনভাবেই এড়াতে পারেনা’
ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের পর চট্টগ্রাম এখন হটস্পটে পরিণত হয়েছে। তাই চট্টগ্রামকে রেড জোন ঘোষণা করে এক মাসের কারফিউ জারি করা উচিত বলে মনে করেন নগর বিএনপির অভিভাবক।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর। এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির উপদেষ্টা জাহিদুল করিম কচি, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক এস.এম. সাইফুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামরুল ইসলাম, সহ-দপ্তর সম্পাদক ইদ্রিস আলী প্রমুখ।