আকাশ ইসলাম: মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সারা দেশে কর্মহীন হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ।ঘরে নেই দুবেলা দুমুঠো খাবার।এমন সংকটময় সময়ে ফোনকল বা এসএমএস করলেই ঘরে বাজার পৌঁছে দিয়ে আসছেন বর্তমান সময়ের মোংলার অতি আলোচিত এক মুখ। শুধু করোনাকালে নয়, দেশের বিভিন্ন দুর্যোগকালে সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখের বন্ধু হয়েছেন তিনি।সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘূর্নিঝড় ‘আম্ফান’-এর সময়ে রাতভর বিভিন্ন এলাকায় এবং আশ্রয়কেন্দ্র ছুটে যান তিনি, শুনতে চান খেটে খাওয়া মানুষগুলোর দুঃখ-দুর্দশার কথা, বাড়িয়ে দেন সাহায্যের হাত।
জনসাধারণের মুখে মুখে তারই নাম। দিন নেই, রাত নেই, অবিরাম ছুটে চলেছেন একের পর এক সামাজিক দায়িত্ব কাঁধে তুলে। ঝড়-বন্যা সব উপেক্ষা করে নিজ জীবনের তোয়াক্কা না করে বারবার জনগণের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন শেখ আব্দুল হাই ব্লাড ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এবং পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব কামরুজ্জামান জসিম।
কখনো রঙের পাত্র হাতে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে রাস্তার স্পিডব্রেকারে রং লাগাতে, কখনো বল-ব্যাট হাতে তরুণ যুবকদের সাথে খেলার মাঠে, কখনো-বা বাজারের ব্যাগ হাতে অসহায় মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার পৌঁছে দিয়ে আসতে, আবার কখনো শক্ত হাতে মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই করতে দেখা গেছে তাঁকে। প্রাণঘাতী করোনার সময়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে শহরের রাস্তা, দোকানপাট ও ব্যাংক-এর সামনে রং দিয়ে বৃত্তাকার চিহ্ন আঁকতে ও হ্যান্ডমাইক নিয়ে জনসচেতনতামূলক বার্তা পৌঁছে দিতে ছুটে চলছে এপার থেকে ওপার ।
মোংলা থানা পুলিশের সাথে মিলে তৈরি করেছেন ‘মানবতার দেয়াল’, যেখানে অসহায় দুস্থ্ মানুষ যারা নতুন পোশাক কিনতে পারে না, তাদের জন্য রেখে দেওয়া হয় প্রয়োজনীয় পোশাক।
রক্তের অভাবে যাতে আর কেউ মারা না যায়, সে লক্ষ্য নিয়ে গড়ে তুলেছেন ‘শেখ আব্দুল হাই ব্লাড ফাউন্ডেশন’ নামক একটি সংগঠন, যার মাধ্যমে রক্তদান করা হয় অসুস্থ্ রোগীদের। এছাড়াও এ সংগঠনটি হাতে তুলে নেয় নানান সামাজিক কার্যক্রম। শহরে জীবানুনাশক স্প্রে ছিটানো, ময়লা-আর্বজনা মুক্তকরণ, রাস্তার স্প্রিডব্রেকারে রং করা, অসহায় মানুষদের সাহায্য করা, বিভিন্ন সংকটকালে মাইকিং করা ইত্যাদি জনকল্যাণমূলক কাজ করে থাকে এই সংগঠন।
মাদকমুক্ত দেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে গঠন করেছেন ‘মাদক মুক্ত দেশ গড়ি’ নামে একটি সংগঠন। যেখানে মাদকমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে মাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়।
এ বিষয়ে জনসাধারণের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, আলহাজ্ব কামরুজ্জামান জসিম এক কথায় মাটির মানুষ। আমাদের সকল বিপদে-আপদে সবসময় কাছে পেয়েছি তাঁকে। করোনার এ সংকটকালে তিনি নানা ধরনের সামাজিক কার্যক্রম করে এসেছেন। তা ছাড়াও অনান্য সময়ও তিনি মানুষের খোঁজখবর নিয়েছেন এবং পাশে দাঁড়িয়েছেন।
আলহাজ্ব কামরুজ্জামান জসিম বলেন, আমি মাননীয় উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এর নির্দেশে এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেশের এমন সংকটকালে মোংলাবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছি। ঘরে ঘরে খাদ্য-সহযোগিতা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এমনকি যারা কাউকে বলতে লজ্জা পায়, তাদের জন্য কল-সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছি। আমার ফোন নম্বরে কল বা এসএমএস দিলেই গোপনে তার বাসায় খাদ্য-উপহার পৌঁছে দিয়ে আসি। এছাড়াও আমি মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর ডাক্তারদের সুরক্ষার জন্য পিপিই প্রদান এবং স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র স্থাপন করেছি। পোশাক কিনতে না পারা অসহায় মানুষের জন্য মোংলা থানা পুলিশের পরিচালনায় এবং শেখ আব্দুল হাই ব্লাড ফাউন্ডেশন-এর সহযোগিতায় ‘মানবতার দেয়াল’ স্থাপন করেছি, যেখানে গরিব মানুষের মাঝে পোশাক বিতরণ করা হয়।এছাড়াও শেখ আব্দুল হাই ব্লাড ফাউন্ডেশন-এর মাধ্যমে নানা সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি।
তিনি আরও বলেন, এমন দুর্যোগময় সময়ে যারা অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন, তাদের আমি সাধুবাদ জানাই।
এ বিষয়ে, ‘সার্ভিস বাংলাদেশ’-এর সভাপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমান মিলন বলেন, ‘সার্ভিস বাংলাদেশ’-এর সম্মানিত উপদেষ্টা আলহাজ্ব শেখ কামরুজ্জামান জসিম পারিবারিকভাবেই সব সময় মোংলার মানুষের আপনজন হিসেবে কাজ করে আসছেন। তরুণসমাজের অভিভাবক হিসেবে তিনি সব সময় মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ক্রীড়াকে প্রধান্য দিয়ে যুবসমাজের অহংকার হিসেবে অবস্থান নিয়েছেন। করোনার মহাযুদ্ধের সময় বিপদগ্রস্ত পরিবারগুলোর বাসায় গিয়ে খাদ্যদ্রব্য-উপহার দিয়ে এসেছেন। রাজনৈতিক ব্যক্তি হয়েও তিনি হয়ে উঠেছেন মোংলাবাসীর নেতা।