ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রবীণ আইনজীবী, ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান, চলচিত্র পরিচালক ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর আমির হোসেন মালিতা ইন্তেকাল করেছেন। আমির হোসেন মালিতার পুত্র আনোয়ারুজ্জামান আজাদ চঞ্চল জানান, শুক্রবার বিকাল আনুমানিক সাড়ে চারটার দিকে ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার পিতা ইন্তেকাল করেন। মত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৭বছর। আমির হোসেন মালিতা ঝিনাইদহ শহরের কাঞ্চননগর এলাকার মহর আলীর ছেলে। তার কন্যা হ্যাপি আমেরিকায় বসবাস করন। শনিবার সকাল ১১টায় ঝিনাইদহ শহরের উজির আলী কেদ্রীয় ঈদগাহ মাঠে রাষ্ট্রীয়ভাবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এরপর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় তার জানাযার নামায। সেসময় সাবেক ও বর্তমান সংসদ সদস্য, আওয়ামীলীগ, বিএনপি নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ জানাযায় অংশগ্রহন করেন। এরপর মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া করেন জানাযায় অংশগ্রহনকারীরা। পরে তাঁকে ঝিনাইদহ কেদ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আমির হোসেন মালিতা স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ঝিনাইদহ পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি রাজনীতি থেকে সরে আসার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় কমিটির সদস্য ছিলেন বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তিনি একজন ভাষাসৈনিক ছিলেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ স্কাউটস ঝিনাইদহ জেলার সাবেক কমিশনার, বাংলাদেশ স্কাউটসের সাবেক জাতীয় উপকমিশনার এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি পদক রৌপ্য ইলিশপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। অন্যদিকে তিনি সত্তর দশকের শেষ দিকে চলচিত্র পরিচালক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তার পরিচালনায় ‘যে আগুনে পুড়ি’ সিনেমাটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। ব্যক্তি জীবনে তিনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার এই মত্যুতে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য মোঃ আব্দুল হাই, সাধারন সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র সাইদুল করিম মিটু, জেলা বিএনপির সভাপতি এম.এ মজিদ, সাধারন সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা, প্রেসক্লাবের সভাপতি এম রায়হান, সাধারন সম্পাদক মাহমুদ হাসান টিপুসহ বিভিন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সুশিল সমাজের নেতৃবৃন্দ। ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ আব্দুল হাই জানান, আমির হোসেন মালিতার মত্যুতে শুধু ঝিনাইদহ নয় দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তার মতো মেধাবী ও একাধিক গুনের মানুষ আজীবন মানুষের হৃদয়ে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
মরহুম আমির হোসেন মালিতার পুত্র আনোয়ারুজ্জামান আজাদ চঞ্চল জানান, বাবার লেখা আত্মজীবনী পড়লে এ প্রজন্ম তাক নিয়ে অনেক কিছু জানতে পারবে ও অনুপ্রেরণা পাবে। বঙ্গবন্ধুর সাথে তার বাবার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। তিনি পরিবারের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে তার বাবার জন্য দোয়া চেয়েছেন।
মর্নিংনিউজ/আই/শাশি