টেকনাফ সীমান্তে অবাধে প্রবেশ করছে থাই গরু

টেকনাফ

টেকনাফ

সরকারি সকল নিয়মনীতিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে অবাদে ঢুকছে থাইল্যান্ডের ব্রাহমা জাতের গরু। ২০১৬ সালে সরকারের কৃত্রিম প্রজনন নীতিমালার অধীনে বেসরকারিভাবে এবং ব্যক্তি উদ্যোগে খামারিদের মাধ্যমে ব্রাহমা গরু আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অথচ প্রশাসনের কিছু ব্যাক্তির সহযোগিতায় গত এক বছর ধরে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ডের এসব গরু বাংলাদেশে আসছে।

টেকনাফ শাহাপরীরদ্বীপ করিডোর সূত্রে জানা গেছে গত এক বছর ধরে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে থাইল্যান্ডের থেকে অবৈধভাবে এসব গরু আনা হচ্ছে। একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরি করে অবৈধভাবে এসব গরু আনা হচ্ছে। এতে করে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে দেশের গবাধি পশুর সেক্টর।

জানা গেছে, টেকনাফের আবু সৈয়দ, মো. শহিদ, আত্মস্বীকৃত ইয়াবা ব্যবসায়ী মম সিং ট্রলারে করে থাইল্যান্ডের এসব ব্রাহামা গরু বাংলাদেশে আনছে। এই সিন্ডিকেটের সাথে ঢাকার সিদ্ধেশ^রীর নাসির উল্লাহ ছোটন, ইস্কাটনের আহম্মেদ সামশুদ্দিন, চট্টগ্রামের আলিফ চৌধুরী ও কক্সবাজারের ইমরুল কায়েস জড়িত।

জানা গেছে, এসব হাইব্রিড গরু আনার বিষয়ে সীমান্তে বিজিবির নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু কোনো এক অজ্ঞাত কারণে এখন বিজিবিও চুপ হয়ে গেছে। এসব গরু ক্রয় করতে গত এক বছরে প্রায় কয়েকশ কোটি টাকা অবৈধভাবে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছে এই চক্র।

নাটোরের প্রান্তিক খামারি গফুর শেখ জানান, আমরা সারা বছর লালন-পালন করে গরু বড় করছি, আর একটি সিন্ডিকেট কোরবানকে সামনে রেখে থাইল্যান্ড থেকে গরু এনে আমাদের বাজার ধ্বংস করে দিচ্ছে। কীভাবে এসব গরু বাংলাদেশে আসছে সেটি খতিয়ে দেখলে সব তথ্য বের হয়ে আসবে।

শাহাজাহান নামের আরেক খামারি জানান, ব্যাংক থকে ঋণ নিয়ে গরু পালন করে আমরা লস খাচ্ছি। আর কিছু ব্যক্তি গরু ক্রয়ের নামে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করছে।

শাহপরীরদ্বীপের এক গরু ব্যবসায়ী জানান, আবু সৈয়দ ও মো. শহিদ এখন থাইল্যান্ডের এসব গরু আনছে। তারা রাতের আঁধারে এসব গরু নিয়ে যাচ্ছে। এই দুজনের কারণে সাধারণ ব্যবসায়ীরা হয়রানির মুখে পড়ছে। এসব গরু আনতে বাধা দেওয়ায় শাহপরীরদ্বীপের মো. ইসমাইল নামের এক ব্যবসায়ীকে তিনটি মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

টেকনাফের গরু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল্লাহ মনির জানান, কয়েকদিনে কিছু ব্রাহামা গরু ঢুকেছে শুনেছি। তবে এসব গরুর সঙ্গে টেকনাফের কেউ জড়িত নয়। যারা এসব গরু এনেছে, তাদের নামেই এসব গরুর চালান, ভ্যাট হয়েছে। ওইসব চালান ও ভ্যাটের কপি জোগাড় করলেই বের হবে ওইসব নিষিদ্ধ গরু কারা কীভাবে এনেছে।

টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান বলেন, সীমান্ত দিয়ে এসব হাইব্রিড গরু আসার কোনো সুযোগ নেই। কেউ যদি এসব গরু আনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া আছে।

ডেইরি সানের মালিক মাসুদুর ইসলাম জিসান জানান, সরকার বিদেশি আমদানি বন্ধে এবং অবৈধ চোরাচালান বন্ধের নির্দেশনা দেওয়ার পরও সীমান্ত পথে গরু আসছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে খামারিদের পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে।

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *