ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের পর ২৭ মে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অব.) জাহিদ ফারুক বাগেরহাটের শরণখোলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের বেড়িবাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি বগী-গাবতলার দুই কিলোমিটার ভেঙে যাওয়া বাঁধ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে দ্রুত মেরামতের আশ্বাস দেন। এর পর প্রায় ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও সেখানে রিংবেড়িবাঁধের কাজ শুরু না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ জন্ম নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বগী-গাবতলা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ভাঙা বাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে ঘরবাড়ি প্লাবিত হচ্ছে। এ সময় বগী সাতঘর এলাকার আবু সাইদ হাওলাদার, মাহাবুল হাওলাদার, ফুলমিয়া হাওলাদার, কালাম হাওলাদার, গাবতলা এলাকার কামাল হাওলাদার, মোহাম্মদ খানসহ ভুক্তভোগীরা জানান, প্রতিদিন দুইবার জোয়ারের পানিতে তাদের ডুবতে হচ্ছে। ঘরবাড়িতে থাকার উপায় নেই। ঘরের মধ্যে পানি উঠে যায়। চুলায় পানি জমে থাকায় অনেকের বাড়িতে রান্না-বান্না হয় না।
ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মন্ত্রী এসে বাঁধের আশ্বাস দিয়ে গেছেন। কিন্তু কাজের কোনো খবর নেই। এখন পানিতে ডুবে মরতে হচ্ছে আমাদের। এভাবে কোনো মানুষ বসবাস করতে পারে?
বগী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রিয়াদুল পঞ্চায়েত ও দক্ষিণ সাউথখালী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. জাকির হোসেন জানান, তাদের দুই ওয়ার্ডের নদীসংলগ্ন তিন শতাধিক পরিবার ভোগান্তিতে পড়েছে। জোয়ারের পানিতে তাদের ঘরবাড়ি তলিয়ে যায়। আম্ফানের পর এ পর্যন্ত দুই-তিন দফা তলিয়েছে। ভাঙন থেকে জোয়ারের পানি ঢুকে এলাকাটি মানুষের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বলেশ্বর-পারের সহস্রাধিক মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। তারা দ্রুত বাঁধের কাজ শুরুর দাবি জানান।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরদার মোস্তফা শাহিন জানান, বগী-গাবতলার ওই দুই কিলোমিটার এলাকায় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রিংবেড়িবাঁধ দেওয়ার কথা। ইতোমধ্যে তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় প্রাথমিক জরিপ করেছেন। শিগগিরই কাজ শুরু হতে পারে।
এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, শরণখোলার সাউথখালী ইউনিয়নের বলেশ্বর নদের ভাঙনকবলিত বগী-গাবতলা এলাকার দুই কিলোমিটারে রিংবাঁধ নির্মাণের জন্য সরকারি আদেশ পাওয়া গেছে। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সেখানে দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে জানায় সূত্রটি।