নিস্তরঙ্গ পুঁজিবাজারে সূচক অপরিবর্তনীয়!

হঠাৎ করেই থেমে গেছে পুঁজিবাজারে সূচকের ওঠানামা। গত প্রায় ১৫ দিন ধরে সূচক একই বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। ফলে গতিহীন হয়ে পড়েছে দেশের দুই পুঁজিবাজার। সূচকের সর্বনিম্ন সার্কিট ব্রেকার নির্ধারণ করে দেওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সার্কিট ব্রেকার দিয়ে কৃত্রিমভাবে বড়ো দরপতন আটকিয়ে রাখা সম্ভব হলেও পুঁজিবাজার তার আকর্ষণ হারিয়েছে। বর্তমানে অধিকাংশ শেয়ার সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে আসায় ৯০ শতাংশ শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত থাকছে।

সূত্র জানায়, গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর থেকে পুঁজিবাজারে বড়ো দরপতন শুরু হয়। এই অবস্থা থেকে উত্তোলনের জন্য গত ১৯ মার্চ পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করে দেয়। এই ক্ষেত্রে ১৯ মার্চের আগের পাঁচ কার্যদিবসের প্রতিটি শেয়ারের গড় ক্লোজিং মূল্য বের করে সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।

সূত্র জানায়, কৃত্রিমভাবে শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করে দেওয়ায় প্রতিটি শেয়ারের দাম একটি নির্দিষ্ট অবস্থানের পর আর কমার সুযোগ নেই। বর্তমানে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার গড় দামে সার্কিট ব্রেকারের কাছাকাছি চলে আসায় লেনদেন হওয়া ৯০ শতাংশ শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত থাকছে। ফলে বাজার তার আকর্ষণ হারিয়ে ফেলেছে। গত ২ জুন ডিএসই‘র প্রদান সূচক ছিল ৩ হাজার ৯৬৯ পয়েন্ট। সবশেষ ১২ কার্যদিবসে মাত্র ৮ পয়েন্ট কমে ৩ হাজার ৮৬১ পয়েন্ট নেমে আসে। প্রতিদিন পুঁজিবাজারে লেনদেন হলেও সূচকে কোনো পরিবর্তন আসছে না। সার্কিট ব্রেকারের কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে বড়ো দরপতন থেকে পুঁজিবাজার রক্ষা পেলেও বাজার হয়ে পড়েছে গতিহীন।

বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ২২৯টি প্রতিষ্ঠানের ২ কোটি ২০ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৭টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া এসব শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১৪টির, কমেছে ১৮টির এবং ১৯৭টি শেয়ার ও ইউনিটের দাম অপরিবর্তিত থাকে। এ দিন ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১ পয়েন্ট কমে ৩ হাজার ৯৬১ পয়েন্টে নেমে আসে। ডিএসইর শরিয়াহ সূচক এ দিন ১ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১ পয়েন্ট কমে যথাক্রমে ৯১৮ এবং ১ হাজার ৩২৫ পয়েন্টে নেমে আসে। এ দিন ডিএসইতে ৬৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট কেনাবেচা হয়েছে।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিএসই‘র সার্বিক মূল্যসূচক আগের দিনের চেয়ে ৫ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ২৫৪ পয়েন্টে নেমে আসে। এ দিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৮৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১০টির, কমেছে ১৬টির এবং ৬২টি শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত থাকে। দিন শেষে সিএসইতে ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *