চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার একমাত্র নমুনা সংগ্রহকারী দেবাশীষ বড়ুয়া সাজু (৩৭) করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব)। এ নিয়ে উপজেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২১০ জনে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুন) রাতে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাবেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত দুই মাস ধরে টানা ৭১৪টি নমুনা সংগ্রহ করার পর করোনায় আক্রান্ত হন দেবাশীষ।
এদিকে, ল্যাব টেকনোলজিস্ট করোনা আক্রান্ত হওয়ায় পার্শ্ববর্তী চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ল্যাব টেকনোলজিস্টের সহায়তায় সাপ্তাহিক তিনদিন করে সন্দেহভাজনদের নমুনা সংগ্রহ করা হবে বলে জানান পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাবেদ।
করোনাকালে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) দেবাশীষ বড়ুয়া একাই পটিয়া এবং কর্ণফুলী উপজেলার সন্দেহভাজনদের নমুনা সংগ্রহ করছেন। গত দুইদিন ধরে তার জ্বর ও সর্দি-কাশি হলে বুধবার সকালে নিজেই তার নমুনা সংগ্রহ করে ফৌজদারহাট বিআইটিআইডির ল্যাবে পাঠান।
এর আগে করোনায় আক্রান্ত হন দেবাশীষের বাবা ও তিন বছর বয়সী ছেলে। এসব কোনো কিছুই তাঁকে দায়িত্ব থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। দায়িত্বপালনের গত দুই মাসে তিনি বাসায় যাননি, থেকেছেন হাসপাতালের পাশে কোয়ার্টারে। এক দিনের ভিডিও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কাজে নেমে পড়েন দেবাশীষ।
তিনি বলেন, গত ২ এপ্রিল থেকে গত ১০ জুন পর্যন্ত পটিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্দেহভাজন ৭১৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছি। মনের মধ্যে কোন দ্বিধা, ভয়-ভীতি ছিল না। গত আড়াই মাসে এক দিনের জন্যও ছুটি নিতে পারিনি। নিয়ম অনুযায়ী ১৪ দিন দায়িত্ব পালনের পর ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা। কাজের চাপে সে সুযোগও পাইনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাবেদ বলেন, রোগীর চাপে কখনো দেবাশীষ বিরক্ত বোধ করেননি। কাজে কোনো অবহেলা নেই তার। বৃহস্পতিবার বিআইটিআইডি’তে নমুনা পরীক্ষায় দেবাশীষের দেহে করোনা জীবানু পাওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, এ পর্যন্ত শুধু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নমুনা সংগ্রহে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২১০ জন। সুস্থ হয়েছেন ৭০ জন। মারা গেছেন ৪ জন।