পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মহাপরিচালক রবার্তো আজেভেদো। বিশ্ব-অর্থনীতি ও বাণিজ্যে অনিবার্য সংকটের ইঙ্গিত দিয়ে নির্ধারিত মেয়াদের এক বছর বাকি থাকতেই এ ঘোষণা দিলেন তিনি। খবর দ্য নিউইয়র্ক টাইমস।
বৃহস্পতিবার (১৩ মে) ডব্লিঊটিও’র সদর দফতর জেনেভা থেকে এক লিখিত বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি। চলতি বছরেই আগস্টের ৩১ তারিখ পদত্যাগ করবেন তিনি। ৬২ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান এ কূটনীতিক গত সাত বছর ধরে সংস্থাটির হাল ধরেছিলেন। তার দ্বিতীয় মেয়াদ ২০২১ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
সংস্থাটি যখন মহামারি করোনার প্রভাব মোকাবিলা করছে ঠিক সে সময়ে এমন সিদ্ধান্ত সমালোচনার মুখে ফেলেছে রবার্তো আজেভেদোকে। বিবিসি বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ডব্লিউটিওর সমালোচনার পর এই পদত্যাগের ঘোষণা আসলো।
তবে ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক বলেছেন, পদত্যাগের সিদ্ধান্ত তার ব্যক্তিগত। পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার এ সিদ্ধান্ত সংস্থাটির জন্য মঙ্গলজনক ফল বয়ে নিয়ে আসবে বলেও মনে করেন তিনি।
ডব্লিউটিও’র সদস্য রাষ্ট্রগুলোর উদ্দেশে লিখিত ওই বিবৃতিতে রবার্তো আজেভেদো জানিয়েছেন, আসছে আগস্টের ৩১ তারিখ পর্যন্তই তিনি তার পদে থাকবেন। তারপর অন্য কেউ দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন।
তিনি জানান, করোনা ভাইরাস বিশ্বের বাণিজ্যসহ সামগ্রিক ব্যবস্থাকে এমনভাবে গ্রাস করেছে যে, ভাবার কোনো কারণ নেই – এই সিদ্ধান্ত তিনি ঝোঁকের বশবর্তী হয়ে নিয়েছেন।
একান্তই ‘ব্যক্তিগত কারণে’ পদ ছেড়ে দিচ্ছেন তিনি। কোনো ‘রাজনৈতিক চাপের’ কাছে মাথা নত করে নয় বরং ব্রাজিলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পরিবারের প্রতি আরও দায়িত্বশীল থাকতেই, মেয়াদ ফুরোবার আগেই দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন – ওই লিখিত বিবৃতিতে এমটাই বলেছেন রবার্তো আজেভাদো।
বিশ্লেষকদের মতে করোনার এ সংকটজনক পরিস্থিতিতে তার পদত্যাগ পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলবে। সারা বিশ্বই এখন মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। করোনার মহামারির প্রভাব কাটিয়ে উঠতে বিশ্বের কর্তাব্যক্তিরা হিমশিম খাচ্ছেন। তখন এই পদত্যাগের ঘোষণা অনেকটা অপ্রত্যাশিত।
অবশ্য ট্রাম্প প্রশাসন বরাবরই ডব্লিউটিওর সমালোচনা করে আসছেন। চীনের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি খারাপ আচরণের অভিযোগ করেছিলেন ট্রাম্প। করোনার আগে চীন-মার্কিন বাণিজ্য নিয়ে উত্তেজনার সময়কালে ডব্লিউটিওর ভূমিকার সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প।
বাণিজ্য উদারীকরণ এবং বাণিজ্য সুরক্ষা দেওয়া প্রধান দায়িত্ব থাকলেও সেটি ডব্লিউটিও সঠিকভাবে পালন করছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। সঠিক পথে না থাকলে ডব্লিউটিও থেকে বেরিয়ে যাওয়ারও হুমকি দেন ট্রাম্প। আজেভেদোর পদত্যাগের বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, ঠিক আছে। আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করা হয়েছিল।