নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনিয়ম-দূর্নীতির বিস্তর অভিযোগ মিলেছে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক সমাজকল্যান মন্ত্রী নুরুজ্জামানের আপন জামাতা হওয়ার সুবাধে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে গত ২০ জুলাই ২০২৩সালে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসাবে যোগদান করেন। এর আগে তিনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের আনুকুল্যতায় লক্ষীপুরের ডিসি,চট্রগ্রামের ডিসি সহ খুলনার বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) এর মত গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। সর্বশেষ বাংলাদেশ স্থলবন্দরের চেয়ার দখলে রেখে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুই দফায় মোট ১১৭জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগের মাধ্যমে সংস্থাটিকে আওয়ামীপন্থি লুটেরা সংস্থায় পরিনত করেছেন বলে জানা গেছে। তার অনিয়ম ও দূর্নীতির কাজে অসহযোগীতা করলে তাকে বদলী বা সাময়িক বরখাস্ত করেন। সর্বশেষ গত ২১ আগস্ট ২৪ সালে ওজন স্কেলে কারচুপির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন,দুর্নীতি,গ্রুপিং ও অফিসিয়াল গুরুত্বপূর্ন তথ্য পাচারের অভিযোগ দেখিয়ে উপপরিচালক (ট্রাফিক) মনিরুল ইসলাম এবং উপ-পরিচালক (প্লানিং) মোঃ কবির খানকে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা হিসাবে সাময়িক বরখাস্ত করেন জিল্লুর রহমান। ভুক্তভোগীরা চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতায় অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে বরখাস্ত হয়েছে বলে দাবি জানান।চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতির খবর গত ২৯ আগস্ট ২০২৪ তারিখে দেশের স্বনামধন্য টিভি চ্যানেল দেশ টিভিতে ধারাবাহিক ভাবে ৩ পর্বে প্রচার হলেও অদৃশ্য কারনে তার তদন্ত হয়নি এখনো। তার দূর্নীতীর প্রতিবেদন (২২ আগস্ট ২০২৪) নয়া দিগন্ত,আমাদের সময়সহ একাধিক প্রিন্ট পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশ হয়েছে।নিজ ক্ষমতায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনের নস্যাতকারী ছাত্রলীগ নেত্রী ও ইডেন কলেজ শাখার নেত্রী ফাতিমা খাতুন লাভলীকে গত ৮ আগস্ট ২০২৪ ইং তারিখে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দিয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরে পোস্টিং দেন। বাংলাদেশ স্থল বন্দরের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের এই লাগামহীন অনিয়ম-দূর্নীতির প্রতিকার চেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর ও বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন গত ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদকে) চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের অবৈধ আয়ের অনুসন্ধান চেয়ে চিঠি দিয়েছেন বলে মুঠোফোনে নিশ্চিত করেন। তার আবেদনে তিনি দেশের স্বনামধন্য প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য দূর্নীতি তুলে ধরেছেন। চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান তার অবৈধ আয় দ্বারা রাজধানীর বসুন্ধরায় ৫ কাটা জমির একটি প্লট ক্রয় করেছেন যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১০০কোটি টাকা,নিজ জেলা সুনামগঞ্জে ৫ একর জমির উপর আলিশান বাড়ি নির্মাণ করেছেন,শশুরবাড়ি এলাকায় লালমনিরহাটে তার স্ত্রীর নামে ১০০একর জমি ক্রয় করেছেন। এছাড়াও স্থলবন্দরের কল্যান তহবিল হতে বিভিন্নভাবে বে আইনি ভাবে জিল্লুর রহমানের প্রতিষ্ঠানে অনুদান প্রদান কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে। এছাড়াও তিনি দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ আয়ের মাধ্যমে নামে-বেনামে অঢেল সম্পত্তি কেনার অভিযোগ রয়েছে। অনিয়ম-দুর্নীতি ও অবৈধ আয়ে অর্জিত সম্পদের অভিযোগের সত্যতা জানাতে চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা যাইনী। সাম্প্রতি বেনাপোল স্থল বন্দরের কার্গো ভেইকল টার্মিনাল উন্নয়ন প্রকল্পের চলমান কাজের দুর্নীতির প্রতিকার পেতে বক্তব্য চাওয়ায় দৈনিক নোয়াপাড়া পত্রিকার বেনাপোল প্রতিনিধি সুমন হোসাইনের নামে তিনি ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) শাহিদা শারমিনকে দিয়ে বেনাপোল পোর্টথানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক। প্রতিকার পেতে তিনি প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চেয়ে চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে আনীত সকল অনিয়ম-দুর্নীতির সুষ্ঠ তদন্তের দাবী জানিয়েছেন।