লায়ন্স ক্লাবস ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিক্ট ৩১৫বি৪ এর গভর্নর লায়ন কামরুন মালেক বলেছেন, ভয়াবহ এক দুর্দিন চলছে। করোনাভাইরাসের আঘাতে আমাদের সবকিছুই লণ্ডভণ্ড হয়ে যাচ্ছে। তছনছ করে দিচ্ছে আমাদের অনেককিছু। তবে ভয়াল এই করোনা লায়ন সদস্যদের মানবতাবোধ নষ্ট করতে পারেনি। এতে করে এই দুর্দিনে লায়ন সদস্যরা চুপ করে থাকতে পারেননি। মানবতাবোধের এই তাড়না থেকেই লায়ন সদস্যরা চট্টগ্রামের মানুষের চিকিৎসা-সুবিধায় কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখার উদ্যোগ নিয়েছেন। আর এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ৩০ বেডের লায়ন্স করোনা সাপোর্ট সেন্টার গড়ে তোলা হলো।
লায়ন কামরুন মালেক গতকাল বুধবার সকালে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ৩০ বেডের লায়ন্স করোনা সাপোর্ট সেন্টারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট লায়ন এস এম মোরশেদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে লায়ন কামরুন মালেক আরও বলেন, সেবার জগতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংগঠন হচ্ছে লায়ন্স ক্লাব। পৃথিবীর ২১০টিরও বেশি দেশে চৌদ্দ লাখেরও বেশি লায়ন সদস্য সেবার জগতে নিজেদের সামর্থানুযায়ী কাজ করে যাচ্ছেন। চট্টগ্রামেও আড়াই হাজারের বেশি লায়ন্স সদস্য এবং দেড় হাজারের বেশি লিও সদস্য সেবার জগতে ভূমিকা রাখছেন। লায়ন্স সদস্যের এই সেবার মানসিকতাই করোনাকালে আমাদেরকে বিশেষ এই উদ্যোগ নিতে সাহসী করে তোলে।
লায়ন কামরুন মালেক চট্টগ্রামের লায়ন এবং লিও সদস্যদের ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, আমার আহ্বানে সাড়া দিয়ে লায়ন সদস্যরা যেভাবে এগিয়ে এসেছেন তা অতুলনীয়। মাত্র দিন কয়েকের মধ্যেই আমাদের প্রত্যাশিত তহবিল তৈরি হয়ে যায়। যা দিয়ে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে আমরা ৩০ বেডের এই করোনা সাপোর্ট সেন্টার গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি। এই সেন্টারে সর্বস্তরের মানুষ সেবা পাবেন। লায়ন্স সদস্যদের প্রয়োজন হলে তারাও এখানে সেবা পাবেন। লায়ন কামরুন মালেক চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এমন একটি সুযোগ দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ট্রেজারার রেজাউল করিম আজাদ লায়ন্স সদস্যদের ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, লায়ন্স ক্লাবের পক্ষ থেকে আমাদের পাশে দাঁড়ানোর মাধ্যমে মূলত চট্টগ্রামের করোনা চিকিৎসায় বড়ো ধরনের ভূমিকা রাখা হলো। তিনি লায়ন্স গভর্নর কামরুন মালেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আপনাদের এই উদ্যোগ চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। মানুষের দান-অনুদানে গড়ে ওঠা এই হাসপাতালে লায়ন্স সদস্যদের এই উদ্যোগ মানুষকে উৎসাহিত করবে। রেজাউল করিম আজাদ বলেন, লায়ন্স করোনা সাপোর্ট সেন্টারে কেন্দ্রীয়ভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ৩০ বেড থাকবে। প্রতিটি বেডেই হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ নেটওয়ার্ক থাকবে। এতে এসব বেডের রোগীরা সার্বক্ষণিক হাইফ্লো অক্সিজেন সরবরাহ পাবে। এইচডিইউ মানের কিছু বেডও রাখা হয়েছে এই সেন্টারে। এখানে কোনো রোগীর অবস্থা গুরুতর হলে তাকে প্রয়োজনীয় আইসিইউ সাপোর্টও হাসপাতাল থেকে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ফলে ৩০ বেডের লায়ন্স করোনা সাপোর্ট সেন্টারে কার্যত পরিপূর্ণ একটি হাসপাতালের সুবিধাই থাকবে।
তিনি ভবিষ্যতেও লায়ন্স সদস্যদের সেবার ক্ষেত্রে মা ও শিশু হাসপাতালকে অগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: স্বামীর সামনে নববধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় র্যাবের হাতে আটক দুই