মেসিকে ছেড়ে দিলে জেলে যেতে হবে বার্সা প্রেসিডেন্টকে!

ছবি: সংগৃহিত

করোনাভাইরাসের কারণে বর্ধিত সময়ের ফুটবল মৌসুম শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ক্লাব ছাড়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েছিলেন বার্সেলোনার সবচেয়ে বড় তারকা লিওনেল মেসি। ক্লাবের সঙ্গে তার চুক্তির একটি শর্ত রয়েছে, তিনি চাইলে ফ্রিতেই যেতে পারবেন অন্য কোনো ক্লাবে। যদিও তার বাই আউট ক্লজ ৭০০ মিলিয়ন ইউরো।

কিন্তু মেসি চাইলেও তাকে কোনোভাবেই ছাড়তে রাজি নয় বার্সেলোনা। ক্লাবটির কথা একটাই, অন্য কোথাও যেতে হলে পুরো ৭০০ মিলিয়ন ইউরো পরিশোধ করেই যেতে হবে। আর করোনার কারণে বড় ক্ষতির মুখের পড়া ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলো এখন এত বেশি অর্থ যে খরচ করবে না তা বেশ ভালোভাবেই জানা বার্সা কর্তৃপক্ষের।

তবে শুধু বাই আউট ক্লজের মারপ্যাঁচেই নয়, মেসিকে যেকোনো মূল্যে বার্সাতেই রাখতে চান ক্লাবটির প্রেসিডেন্ট জোসেফ মারিয়া বার্তেম্যু। এর পেছনে রয়েছে তার ব্যক্তিগত স্বার্থও। কেননা মেসি যদি বার্সেলোনা ছেড়ে যান তাহলে জেলও হতে পারে বার্সা প্রেসিডেন্ট বার্তেম্যুর।

ইউরোপের বেশিরভাগ ক্লাবের মতো বার্সেলোনা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন ক্লাব নয়। এর মালিক ক্লাবের সদস্যরাই। অর্থাৎ ক্লাবের যেকোনো ভালো-মন্দ সিদ্ধান্তে ক্লাবের সদস্যরাই প্রশ্ন তুলতে পারবেন, এমনকি চাইলে আইনি ব্যবস্থাও নিতে পারবেন।

এ বিষয়টি তুলে ধরে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম বিবিসির ক্রীড়ালেখক গুইলেম বালাগ জানিয়েছেন, বার্সেলোনা যদি এখন মেসিকে ছেড়ে দেয় এবং পরবর্তী প্রেসিডেন্ট যদি মনে করেন এতে ক্লাবের ক্ষতি করেছেন বার্তেম্যু, তাহলে বার্তেম্যুর বিপক্ষে বড় অঙ্কের জরিমানাসহ আদালতে মামলাও করতে পারবেন নতুন প্রেসিডেন্ট।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে বালাগ লিখেছেন, ‘বার্তেম্যু মেসিকে ধরে রাখতে চায় কারণ কোচ (রোনাল্ড কোম্যান) তাকে দলে চায়। যখন কোম্যান বার্তেম্যুকে জিজ্ঞেস করেছে, আমার কাছে কি মেসি আছে? তখন প্রেসিডেন্ট বলেছে, হ্যাঁ। কিন্তু পরদিনই জর্জ মেসি (লিও মেসির বাবা) ফের বলেছেন, তার ছেলে ক্লাব ছাড়তে চায়। তখন কোম্যান জানিয়েছেন, তিনি মেসিকে ছাড়াও শক্তিশালী দল বানাতে পারবেন।’

‘এছাড়া অন্য কারণ হলো, বার্তেম্যু তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের শক্তিশালী করতে চায়। তবু শেষপর্যন্ত যদি সে মেসিকে বিক্রি করে দেয়, তাহলে পরবর্তী ক্লাব প্রেসিডেন্ট কিংবা পুরো মৌসুমের টিকিটধারীরা চাইলে ক্লাবের সম্পদের অপব্যবহারের অভিযোগ আনতে পারবে। যা কি না তার (বার্তেম্যু) নিজের পকেট থেকে বড় অঙ্কের অর্থ খসাতে পারে, এমনকি জেলও হতে পারে। তাই শেষপর্যন্ত মেসিকে ধরে রাখতে লড়বে বার্তেম্যু।’

বার্সেলোনার ইতিহাসে ক্লাব প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এমন ঘটনা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে বার্তেম্যুর আগের প্রেসিডেন্ট সান্দ্রো রাসেলকেও যেতে হয়েছিল জেলে, থাকতে হয়েছিল ২০ মাস। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল নেইমারকে কেনার সময় ক্লাবের ফান্ড থেকে অর্থের অপব্যবহার।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *