ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে মোংলায় মঙ্গলবার দুপুর থেকেই থেমে থেমে গুড়িগুড়ি বৃষ্টিপাত শুরু হলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে আকাশ ঘন মেঘে অন্ধকার হতে থাকে। রাতে ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি বৃষ্টিপাত হতে দেখা গেছে। ইতোমধ্যে ১০০-১৫০ জন মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে অনেককেই আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
কেউ কেউ বলছেন, এই মুহূর্তে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে ভয় লাগছে, কারণ করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে। আশ্রয়কেন্দ্রে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন জড়ো হবেন বিধায় করোনার ভয়ে অনেকেই সেখানে যেতে চাচ্ছেন না।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার বিষয়ে বলেন, ৭ নম্বর বিপদ-সংকেত জারির পর বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অ্যালার্ট থ্রি জারি করা হয়েছে। এবং বন্দরে যে ১০টি বিদেশি জাহাজের অবস্থান রয়েছে, সেগুলোর কাজ বন্ধ রেখে নিরাপদে সরিয়ে রাখা হয়েছে। বন্দরের নিজস্ব নৌযানগুলো নিরাপদে রাখার পাশাপাশি পশুর চ্যানেলের সব নৌযানকে অন্যত্র নিরাপদে থাকার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া বন্দর জেটিতে নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের আটটি যুদ্ধজাহাজ অবস্থান নিয়েছে। সব মিলিয়ে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে এবং ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাহাত মান্নান ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. নাহিদুজ্জামান বলেন, এখানকার ৮৪টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ বহুতল ভবনবিশিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা ১০৩টি। এছাড়া জনসাধারণকে সচেতন ও আশ্রয় কেন্দ্রমুখী করতে এক হাজার ১০০ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন।
পৌর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে চালানো হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ের সর্তকবার্তার ব্যাপক প্রচারণা। বন্দর কর্তৃপক্ষ, পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসন পৃথক কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতি ও প্রচারণা চালাচ্ছে। এ বিষয়ে পৌর মেয়র আলহাজ মো. জুলফিকার আলী বলেন, পৌরসভার ডিজিটাল কেন্দ্র থেকে প্রতিনিয়ত প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এ ছাড়া পৌর এলাকার মধ্যকার আশ্রয় কেন্দ্রগুলো ধুয়ে-মুছে পরিষ্কারের পাশাপাশি খোলা রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আগতরা যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অবস্থান করেন, সেদিকেও লক্ষ রাখা হবে।