যশোর জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার(১৫ জুন) পর্যন্ত জেলায় মোট ২২৯ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে একজন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ১০১ জন। যশোরে অধিক সংক্রমিত এলাকার ছয়টি উপজেলার ১৭ এলাকাকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। এ সব এলাকাগুলো মঙ্গলবার (১৬ জুন) সকাল ৬ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রেড জোনের আওতায় থাকবে।
সোমবার (১৫ জুন) দুপুরে যশোর জেলা করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফের নির্দেশনায় একটি গণবিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রেড জোন এলাকায় সব ধরনের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক গণজমায়েত নিষিদ্ধ করা হলো। সব জনসাধারণ আবশ্যিকভাবে নিজ নিজ আবাসস্থলে অবস্থান করবেন। করোনা মোকাবিলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি গাড়ি চলাচলে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিতে হবে। এছাড়া অ্যাম্বুলেন্স, রোগী পরিবহন, যানবাহন, স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া ব্যক্তির পরিবহন, করোনা মোকাবিলা ও জরুরি পরিষেবা দেওয়া কর্তৃপক্ষের গাড়ি, জরুরি সংবাদকর্মীর গাড়ি প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব সেবামূলক প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। সকল প্রকার স্কুল, কলেজ, কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
জেলায় রেড জোনের আওতাভুক্ত এলাকাগুলো হলো- যশোর সদর উপজেলার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড, আরবপুর, নিউটাউন, অভয়নগর উপজেলার চল্লিশা, পায়রা, বাঘুটিয়া, অভয়নগর পৌরসভার ২, ৪, ৫, ৬, ৯ ওয়ার্ড, চৌগাছা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড, শার্শা উপজেলার শার্শা, পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড ও ঝিকরগাছা পৌরসভার ২, ৩ নম্বর ওয়ার্ড, কেশবপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড।
ইয়েলো জোন হিসেবে চিহ্নিত এলাকাগুলো হলো- যশোর পৌরসভার ৬, ৭, ৮ নম্বর ওয়ার্ড, কাশিপুর, ফতেপুর, মণিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া, ঝাঁপা, কাশিমনগর, অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাঘ, শিরধরপুর, শুভরাড়া, পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড, ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালি, বাঁকড়া, চৌগাছা উপজেলার স্বরূপদাহ, বাঘারপাড়া উপজেলার বাসুয়াড়ী, কেশবপুর উপজেলার কেশবপুর। এছাড়া জেলার ১২১টি জায়গাকে গ্রিন জোন হিসেবে চিহ্নত করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শফিউল আরিফ বলেন, জেলার আটটি উপজেলাকে ইউনিয়ন ভিত্তিক ও পৌরসভায় ওয়ার্ড ভিত্তিক করোনা সংক্রমণের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে এ তিনটি জোনে বিভাজন করা হয়। বিভাজনে যে ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড করোনায় খুব বেশি সংক্রমিত বলে তথ্য রয়েছে, সেগুলোকে ‘রেড জোন’, যে ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড মাঝারী পর্যায়ে সংক্রমিত বলে তথ্য পাওয়া গেছে সেগুলোকে ‘ইয়েলো জোন’ বা হলুদ চিহ্নিত এলাকা এবং যে ইউনিয়ন বা ওয়ার্ডে করোনা একেবারে সংক্রমিত হয়নি সেগুলোকে নিরাপদ রাখতে গ্রিন জোন বা সবুজ চিহ্নিত এলাকা হিসেবে বিভক্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে মঙ্গলবার সকাল থেকে সিদ্ধান্ত পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে। এসব নিদের্শনা কেউ না মানলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।