১১৩ কিলোমিটারের গল্প

ভারত থেকে বাংলাদেশে যে ৫৪টি নদী প্রবেশ করেছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে তিস্তা। এটি ভারতের সোলামো লেক থেকে উৎপন্ন হওয়ার পর সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে রংপুর জেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। পরে এটি চিলমারির কাছে ব্রহ্মপুত্র নদের সাথে মিলিত হয়েছে।
তিস্তা শুধু একটি নদী নয়, তিস্তা পারের মানুষের জন্য এটি একটি হাহাকারের ইতিহাস। দেশের মোট শস্য উৎপাদনের চল্লিশ ভাগ পুরন করত যে মানুষেরা তারাই আজ তথাকথিত মঙ্গা কবলিত অসহায় মানুষ। শুকনা মৌসুমে এর অববাহিকার মানুষ গুলো পানির কষ্টে নিজেদের মৌলিক চাহিদা মেটানোর জন্য যে খাদ্য শস্য আবাদ করবে তাও পারে না। একবেলা খায় তো অন্যবেলা উপোস কাটায়। আবার কেউ কেউ বাঁচার জন্য নিজেদের ভীটে মাটি ছেড়ে শহরে চলে আসে দিনমজুর খেটে বেচে থাকে বাসস্থানহীন উদবাস্তু হিসেবে। এক অভিশপ্ত জীবন যেনো তাদের। আবার বর্ষা মৌসুমে অনেক কষ্ট করে হয়ত ফসল ফলায়, ফসল তোলার আগেই হয়ত মাঝ রাতে ঘুম ভাঙে তিস্তার মরন ডাক শুনে৷ নিমিষেই সব ভেসে যায়। যে মানুষটি গতকাল স্বপ্ন দেখেছিলো ফসল তুলে হাসির মুখ দেখবে সেই মানুষটি নির্বাক হয়ে যায় বন্যার পানির সামনে দাড়িয়ে, সব কিছু হারিয়ে। যত নির্মম ভাবেই বর্ননা করুন তিস্তার মানুষের কান্নার সিকে টুকুও প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তিস্তার পারের মানুষ গুলো যেন কোন রুপকথার অভিশাপ নিয়ে বেচে থাকার একেকটি গল্প। যারা কখনো নিজের চোখে এই বন্যা দেখেনি, নিজের চোখে দেখেনি মাইল কে মাইল শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে নদীটি, তাকে বর্ননা করে বুঝানোর ক্ষমতা কারো নেই।
যদি তা সত্যি কোন অভিশাপের গল্প হত তবে মেনে নেয়া ছাড়া কিছুই ছিলো না, হয়ত এত দিনে প্রতিবছর তিস্তার পারের মানুষ স্বপ্ন দেখা ও ভাঙার মাঝে পিষ্ট হত না। সব ছেড়ে চলে যেতো। অথবা যদি তা প্রকৃতির কারনে হত তাও হয়ত স্বান্তনার কিছু খুঁজে নিতো।
আজ যার ভারতকে বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র বলো, তারা একবার বন্যায় অথবা খড়ায় তিস্তার পারে দাড়িয়ে মানুষগুলোর মুখ গুলো দেখো। নিজেকে এর থেকে বড় হিপোক্রেট কোন দিনই অনুভব করবে না নিশ্চিত। অন্তত এই মানুষগুলোর দুঃখ্য দেখলে ভারতকে বন্ধু রাষ্ট্র বলার আগে দশবার বাধা পেতে নিজের বিবেকের কাছে।
১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে তিস্তা নদীর জল বণ্টনের ব্যাপারে স্থির হয় যে, তিস্তা নদীর জলের শতকরা ৩৬ শতাংশ পাবে বাংলাদেশ এবং ৩৯ শতাংশ পাবে ভারত। বাকী ২৫ শতাংশ জল নদীটির সংরক্ষিত রাখা হবে। কিন্তু কী ভাবে এই জল ভাগাভাগি হবে সে বিষয়ে কোন দিকনির্দেশনা ছিল না। বহুকাল পরে ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৫, ২৬ ও ২৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত একটি যৌথবৈঠকে বাংলাদেশ তিস্তার জলের ৮০ শতাংশ দু’দেশের সমান অংশে ভাগ করে অবশিষ্ট ২০ শতাংশ নদীর জন্য সংরক্ষিত রাখার বিষয়ে প্রস্তাব দেয়। ভারত এই প্রস্তাবে অসম্মতি প্রকাশ করে। নীলফামারীর তিস্তা নদীর উজানে ভারত জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার মহকুমায় গজলডোবা ব্যারেজ নির্মাণ করে বাংলাদেশে স্বাভাবিক জলপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করছে । ২০১৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিস্তা নদীর মূল জলপ্রবাহের উল্লেখযোগ্য অংশ বাংলাদেশের তিস্তায় আসতে দেয়া হয়েছে। ২০১৪ খ্রিস্টাব্দের শুষ্ক মৌসুমে ভারত কর্তৃক তিস্তার জলপ্রবাহ বন্ধ করে দেয়। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের জল-ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত বলেন যে, ‘‘তিস্তার মূল প্রবাহ ভারত প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ”
ভারতের সাথে পানি বণ্টন নিয়ে সমস্যার সূচনা ১৯৫১ সালে, পাকিস্তান আমল থেকেই। ১৯৬৪ সালে বিশ্বব্যাংকের সাহায্য নিয়ে গঙ্গা নদীর ওপর ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ পানি বিষয়ক বিরোধকে উস্কে দেয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হলে ১৯৭২ সালে গঠিত নদী কমিশন এবং ১৯৭৪ সালে ইন্দিরা মুজিব-চুক্তি পানি বিরোধে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখায়। সেই চুক্তিতে বলা হয়েছিল, দুই দেশের অভিন্ন ৫১টি নদীর পানিবণ্টন নিয়ে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত (সব জল ভাগাভাগি করা) নেওয়া হবে। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে ৩০ বছর মেয়াদী গঙ্গার পানি চুক্তি হলে গঙ্গার পানি বিষয়ক সমস্যার আপাত সমাধান হয়। কিন্তু ভারত ১৯৮২ সালে সিকিমের গজলডোবার কাছে তিস্তা নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণের প্রভাবে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে মরুকরণ শুরু হয়।
২০০৮ সালের আওয়ামিলীগের নির্বাচনের অন্যতম একটি প্রতিশ্রুতি ছিলো তিস্তার পানি চুক্তি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তার কুটনৈতিক সকল মেধা, শ্রম দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যান এই তিস্তা চুক্তির জন্য। প্রতি বছর ভারত না না তালবাহানা জুড়ে দিতে থাকে একের পর এক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যান্ত ধৈর্য ও মহানুভবতা ও মানবিকতার বিবেচনায় এক এক করে ভারতের প্রতিটি দাবী পুরন করে যায় শুধু মাত্র তিস্তার পানির আশায়। ভারত শুধু বাংলাদেশ, দেশের নাগরিক নয় বঙ্গবন্ধু কন্য শেখ হাসিনার সাথে প্রতিশ্রুতি ভেঙে সম্পূর্ণ চোখ পাল্টিয়ে ২০১৪ সাল থেকে শুস্ক মৌসুমে তিস্তার পানি একদম বন্ধ করে দেয়। আর বর্ষা মৌসুমে এক সাথে তাদের সব বাধ খুলে দেয়া শুরু করে৷
সম্ভবত জননেত্রী শেখ হাসিনা ভারতের এই বন্ধু হয়ে পিঠে ছুড়ি মারার বিষয়টি মেনে নিয়ে মর্মাহত হয়েই গত বছর বলেন ” আমরা পানির জন্য আর কারো কাছে যাবো না, আমরা আমাদের ব্যাবস্থা নিজেরাই করব ”। ভারতের উপর থেকে চরম অবিশ্বাস ও হতাশা থেকেই বঙ্গবন্ধু কন্য অত্যান্ত সাহসী এবং আধুনিক যুগের পানি ব্যাবস্থাপনাতেই ফিরে আসেন৷
“Tista River Comprehensive Management and Restoration Project”
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তার সর্বশেষ চীন সফরেই চীনের প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে কয়টি দাবি করেন তার মধ্যে অন্যতম তিস্তা প্রকল্পে চীনের আর্থিক সহায়তা। চীনের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের এই অনুরোধ সমর্থন করেন এবং তিস্তা প্রকল্পে অর্থায়নে সম্মত হত। The One Billion Dollar, আলোর পথের শুরুটাই এমন ছিলো৷ ভারত কল্পনাও করতে পারে নাই, বঙ্গবন্ধু কন্যা এত বড় একটি মাস্টার ব্লাস্টার প্লান করবে।
কি থাকছে এই প্রকল্পে – 
ধারনা করা হচ্ছে এই প্রকল্প সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন হবার পরে ভারতের সাথে তিস্তা নিয়ে আমাদের আর কোন আলোচনারই প্রয়োজন হবে না। নদীর ১১৩ কিলোমিটার সম্পূর্ণটাই একটি নদী শাসন ব্যাবস্থার মধ্যে নিয়ে আসা হবে৷ তিস্তার অনেক জায়গার প্রশস্ত দুই তিন কিলোমিটার আবার অনেক জায়গায় পাঁচ সাত কিলোমিটার। এই প্রকল্প নদীর প্রশস্ত কে কমিয়ে দুই থেকে তিন কিলো মিটারের মধ্যে নিয়ে আসা হবে৷ সম্পূর্ণ নদীর দুই পাশ স্থায়ী ভাবে ব্লক ও পাকা করা হবে, যেনো বন্যা বা অতি স্রোতে ভাঙন না হয়। এই ১১৩ কিলোমিটার নদীর দুই পাশেই নদীতে হারিয়ে যাওয়া জমি পূর্ণ উদ্ধার করা হবে। দুই পারে রিভার ওয়ে করা হবে যা মহাসড়কের সাথে যুক্ত হবে। উদ্ধার করা জমিতে পর্যটন সহ শিল্প কারখানা করা হবে৷ নদীর গভীরতা বৃদ্ধি করার কারনে সুকনা মৌসুমে প্রয়োজনীয় পানি সংরক্ষণ করা হবে৷ ১১৩ কিলোমিটার লম্বা সুবিশাল জলের আধার হবে যা দুই পারের মানুষের কৃষি কাজে ব্যবহার হবে। বর্ষা মৌসুমে নদীর তীব্রতা থাকাকালীন স্লুইচ গেটের মাধ্যমে নদীকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। জলবিদ্যুৎ প্রকল্পেও এর সাথে যুক্ত হবার সম্ভাবনা আছে।
ভারত বন্যার সময় চাইলেও তখন এই অঞ্চলের মানুষকে বন্যায় ভাসাতে পারবে না৷ বাংলাদেশই তখন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে কতটুকু পানি বাংলাদেশ তিস্তার মাধ্যমে ব্রম্মপুত্র নদীতে ফেলবে৷ এই প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়নের ফলে এতদিন তিস্তার পারের মানুষ যে বন্যাকে মেনে নিতে হত সেই বন্যাই তখন ভারতের কলকাতা শহরের প্রধান চিন্তা হয়ে দাড়াবে৷ ভারত চাইলেই যেহেতু সব পানি এক সাথে বের করে দিতে পারবে না, সেহেতু ভারতের তখন ওইসব অঞ্চলে বন্যার উপর নিয়ন্ত্রণ রাখাও সম্ভব হবে না বলে আশংকা করছে ভারতের নদী ও ভুতত্তবিদগণ।
এই প্রকল্প তিনটি কারনে বর্তমানে ভারতের চিন্তার ভাজ ফেলেছে। বাধ্য হয়েই তড়িঘড়ি করে তাদের পররাষ্ট্র সচিবের বাংলাদেশ ছুটে আসতে হয়েছে।
এক নাম্বার কারন, তিস্তার বিষয় দেখিয়ে ভারতের আর কোন ব্লাকমেইল ব্যবস্থা থাকবে না। তিস্তা নিয়ে দরকষাকষির সুবিধা সম্পূর্ণ চলে যাবে।
দুই নাম্বার কারন, এই অঞ্চলে যদি মানুষ তিস্তার সুফল পাওয়া শুরু করে তবে, ভারত বিদ্দেশি বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া আরও বেড়ে যাবে এবং দেশের জনসাধারণের মাঝে চীনের প্রতি দুর্বলতা বাড়বে, যা ভারতের জন্য অত্যান্ত মাথা বেথার কারন।
তিন নাম্বার কারন ভারতের সাথে তথাকথিত বন্ধুত্বের তুলনায় চীনের সাথে সম্পর্ক সুদৃঢ় হবে। ভারত তার সর্বশেষ প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্রকেও হারানোর ভয় পাচ্ছে।
অর্থনৈতিক ভাবে এই প্রকল্প ব্যায় বর্তমান বাংলাদেশের অনেক মেগা প্রকল্পর তুলনায় অনেক কমই বলা যায়। মাত্র আট হাজার কোটি টাকার ঋণে সামাল দেয়া এখন বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য তেমন বড় কোন চ্যালেঞ্জ নয়। তবে এই প্রকল্পের ফলে উত্তর বঙ্গ তাদের হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে। দেশের কৃষি উৎপাদন ৪০% শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। প্রতিবছর তিস্তার কারনে যে বন্যা হয় তাতে এক লক্ষ বিশ হাজার কোটি টাকার সমতুল্য ক্ষতি হয় আনুমানিক। এত বড় ক্ষতি থেকেও প্রতিবছর বাংলাদেশ রক্ষা পাবে৷ ধারনা করা হচ্ছে, মাত্র আট হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হলেও এই প্রকল্প সব মিলিয়ে দেশের অর্থনীতিতে দের লক্ষ কোটি টাকার ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে প্রতিবছর৷ উত্তর অঞ্চলের বিশাল এক জনগোষ্টির আদি কর্ম কৃষিতে ফেরত যেতে পারবে। যা সরাসরি দেশের অর্থনীতিতে বিশাল প্রভাব ফেলবে।
হোয়াংহো অর্থ হলুদ, চীনের হোয়াংহো নদী মানে চীনের হলুদ নদী। হলুদ নদী শুনলেই মনে পড়ে যায় মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শেষ বয়সে রচিত হলুদ নদী সবুজ বন বইটির কথা। দুই হাজার বছর পূর্বে অর্থাৎ সভ্যতা বিকাশের প্রাক্কালে মানুষ যখন এই নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের প্রচুর গাছ-পালা কাটতে থাকে তখন এখানকার ধূসর হরিদ্রার বর্ণের মাটি এই নদীর পানির সঙ্গে মিশে হলুদ বর্ণের সৃষ্টি করে আর সেই থেকেই এই নদীর নাম হয় হোয়াংহো। প্রাচীন চীনে প্রায়ই হোয়াংহো নদী থেকে বন্যার সূত্রপাত হতো। ইতিহাসের ভাষ্য অনুযায়ী এই নদী অতি প্রচন্ডভাবে ২৬ বার নিজের গতিপথ বদলেছে। এর ফলে চীনের জনগন ভোগ করেছে অবর্ণনীয় দূঃখদুর্দশা। সেখান থেকেই এই নদীকে বলা হত চীনের দুঃখ্য। আজ চীন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতায় এমন স্থানে পৌঁছে গেছে তারা এখন হোয়াংহো নদীকে সম্পূর্ণ বশে আনতে পেরেছে, এই নদীতেই বিশাল জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বানীয়েছে৷ নদীর আশ পাশ বনায়ন ও শিল্প কলকারখানা সংমিশ্রণে হোয়াংহোর দুঃখ্যকে জয় করে তাদের সমৃদ্ধির অন্যতম আধার বানিয়েছে। আমাদের তিস্তা ও তিস্তার পারের গল্পও অনেকটা ওয়াংহো নদীর মতই৷ যদিও চীনে নিজেদের জন্য তা দুঃখ্যের কারন হয়েছিলো আর আমাদের তথাকথিত বন্ধুর ভারতের পৈশাচিক লোভের কারনে তিস্তার মানুষ আজ সব হারিয়ে হাহাকার করছে।
আমরা মনে প্রানে আশা করি বন্ধুত্বের হাত প্রসারিত করে চীন তাদের হোয়াংহোর মত আমাদের তিস্তা নদীকেও তাদের মত করে দুঃখকে ১১৩ কিলোমিটারের গল্প সম্পদ ও অহংকারে পরিণত করবে৷ আমরাও চীনের মত বলতে পারব তিস্তা আমাদের একটি নদী৷ সুখের নদী।
লেখক- রাশেদ আলম, কলামিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
ইমেইল: rashedalamhp@gmail.com
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *