২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য দুই লাখ পাঁচ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) খসড়া চূড়ান্ত করছে পরিকল্পনা কমিশন। এটি চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির তুলনায় ১২ হাজার ২২৪ কোটি টাকা বেশি। এছাড়া করোনা মোকাবিলায় এবারের এডিপিতে স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধিরও পরিকল্পনা করেছে সরকার।
মঙ্গলবার (১২ মে) পরিকল্পনা কমিশনের সভাকক্ষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য এনইসি সভায় নতুন এডিপি’র চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, নতুন এডিপি’র আকার ধরা হয়েছে দুই লাখ পাঁচ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এক লাখ ৩৪ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা ও বৈদেশিক সহায়তা বাবদ ৭০ হাজার ৫০১ কোটি ৭২ লাখ টাকা খরচ করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, করোনা ভাইরাসের কারণে সামগ্রিক অর্থনীতির সঙ্গে নতুন এডিপিতেও প্রভাব পড়েছে। এ কারণে বৈদেশিক সহায়তায় বরাদ্দ কমানো হয়েছে। একই সঙ্গে প্রকল্পের সংখ্যাও কমছে। করোনা মোকাবিলায় এবারের এডিপিতে স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে সরকার। গুরুত্বের দিক থেকে এর পরেই সর্বোচ্চ বরাদ্দ থাকছে পরিবহন খাতে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ ও তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে শিক্ষা খাত।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণ এবং এর প্রভাব ঠেকাতে আগামী অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ১৩ হাজার ৩৩ কোটি টাকা। নতুন এডিপিতে কৃষি খাত পাচ্ছে ৮ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা। পরিববহন খাতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা। বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা। শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে সাড়ে ২৩ হাজার কোটি টাকা।
চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের মূল এডিপিতে বৈদেশিক সহায়তা পরিমাণ ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা থাকলেও করোনার কারণে আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের এডিপিতে বৈদেশিক সহায়তার বরাদ্দ কমে ধরা হচ্ছে ৭০ হাজার ৫০১ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দসহ অনুমোদিত প্রকল্প যুক্ত হচ্ছে এক হাজার ৫৮৮টি (স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ছাড়া)। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে এর পরিমাণ ছিল এক হাজার ৭৪৪টি। ফলে নতুন অর্থবছরে কমছে ১৫৬টি উন্নয়ন প্রকল্প।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছেন, করোনার কারণে এডিপিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। আমরা খসড়াটি তৈরি করলাম। এনইসি সভায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এডিপি চূড়ান্ত করা হবে।