অক্সফোর্ডের করোনার টিকা ৭০ শতাংশ কার্যকর বলে দাবি

যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও সুইডিশ-ব্রিটিশ বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি নভেল করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য টিকা বড় আকারে চালানো ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে প্রাপ্ত ফলের ভিত্তিতে, ৭০ শতাংশ রোগীর শরীরে সংক্রমণ প্রতিরোধে সক্ষম বলে দাবি করেছে গবেষকরা। আজ সোমবার সংবাদমাধ্যম ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির  এমনটি জানানো হয়। অক্সফোর্ডের গবেষকেরা পুরোনো ও দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত পদ্ধতিতে ১০ মাস ধরে গবেষণা চালিয়ে এমন দাবির কথা জানালেন।

তবে বিবিসির প্রতিবেদনে, ফাইজার-বায়োএনটেক ও মডার্নার তৈরি টিকাগুলো যেখানে ৯৫ শতাংশ সুরক্ষা দিতে পারছে, সেখানে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই সাফল্যকে বিশেষ কিছু বলার সুযোগ আছে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। তবে অন্য ভ্যাকসিনগুলোর তুলনায় অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন অনেক সাশ্রয়ী এবং তুলনামূলকভাবে সংরক্ষণ করা সহজ বিধায় সহজেই পৃথিবীর যেকোনও প্রান্তে পৌঁছে দেওয়া সহজ হবে।

ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রধান পরীক্ষক অধ্যাপক অ্যান্ড্রু পোলার্ড বিবিসিকে জানান, ‘আমরা এ ফলাফল নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট।’

পরীক্ষা সংশ্লিষ্টরা জানান, বড় আকারের পরীক্ষাটি চালানো হয়েছিল ২০ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে। এদের ৫০ ভাগ যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা আর ৫০ ভাগ ব্রাজিলের। এতে দেখা গেছে ভ্যাকসিনের দুই ডোজ গ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবীদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৩০ জন। অন্যদিকে, ডামি বা নকল ভ্যাকসিন গ্রহণকারীদের মধ্যে ১০১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। গবেষকরা এর ভিত্তিতে বলছেন, ভ্যাকসিনটি ৭০ শতাংশ কার্যকরী।

দুইটি উচ্চ ডোজে স্বেচ্ছাসেবীদের ৬২ শতাংশ সুরক্ষা নিশ্চিত হয়েছে। কিন্তু, যখন একটি উচ্চ মাত্রার ডোজ ও একটি নিম্ন মাত্রার ডোজ দেওয়া হয়, তখন এটি ৯০ শতাংশ কার্যকারিতা দেখাতে সক্ষম হয়। তবে এ দুইটির মধ্যকার পার্থক্যের কারণ স্পষ্ট নয়।

বিবিসির তথ্যানুসারে, অনুমোদন পাওয়ার পর প্রথমে যুক্তরাজ্যের চিকিৎসা খাতে সেবাদানকারীরা এবং ৮৫ বছরের বেশি বয়সের লোকজন টিকাটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাবেন। পরবর্তীতে, দেশটি বয়সের ক্রমানুযায়ী টিকার বিতরণ নিশ্চিত করবে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিকে যুক্তরাজ্য সরকার এই টিকার ১০ কোটি ডোজ অর্ডার দিয়ে রেখেছে যা দিয়ে দেশটির পাঁচ কোটি মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করা সম্ভব হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *