করোনা সঙ্কট মোকাবেলায় দীর্ঘ পাঁচ দিনের ইইউ শীর্ষ সম্মেলন শেষে বিশাল অংকের আর্থিক প্যাকেজ ও দীর্ঘমেয়াদী বাজেট অনুমোদন করল ইউরপেয়ান ইউনিয়নের শীর্ষ নেতারা৷ ২৭ টি দেশের নেতাদের মতামতের ওপর ভিত্তি করে, কিছু দেশের ঐকমত্য এবং কারো দ্বিমত থাকা সত্ত্বেও, এই প্রণোদনা মন্দা কাটাতে সফল হবে বলে অনেকের আশা।
গত শুক্রবার ( ১৭ জুলাই) থেকে বিরতিহীন এক আলোচনা ও দরকষাকষির পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ নেতারা অবশেষে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্যে আসতে পেরেছেন৷ করোনা মোকাবেলার জের ধরে ইউরোপে চরম অর্থনৈতিক মন্দার মোকাবেলা করতেই এই প্রণোদনা।
মঙ্গলবার (২১ জুলাই) ইইউ প্রধান “শার্ল মিশেল” এই ঘোষণা করেন৷
প্রণোদনা বাজেটের প্রায় ৭৫ হাজার কোটি ইউরোর মধ্যে ৩৯ হাজার কোটি ইউরো সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলিকে অনুদান হিসেবে দেওয়া হবে এবং অবশিষ্ট অর্থ ঋণ হিসেবে বণ্টন করা হবে৷
প্রথম দিকে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ৫০ হাজার কোটি ইউরো প্রণোদনা দেওয়ার পস্তাব করলে অন্য চার সদস্য দেশ নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, সুইডেন এবং শেষ পর্যন্ত ফিনল্যান্ডের আপত্তির কারণে এই প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায় ।
কোনো দেশ যদি অনুদান গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যকর না করে অন্য দেশগুলো সেক্ষেত্রে তিন মাসের জন্য অনুদান বন্ধ রাখতে ভেটো প্রয়োগ করতে পারবে৷
করোনা সংকটের বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনার বদলে ইইউ দীর্ঘমেয়াদী বাজেটের কর্মসূচি রূপায়নের পরিকল্পনা নিয়েছে৷ ২০২১ থেকে ২০২৭ সালের জন্য এক লাখ দশ কোটি ইউরো অঙ্কের বাজেটের প্রস্তাবও অনুমোদন করেছেন ইইউ শীর্ষ নেতারা৷
দীর্ঘ এক ম্যারাথন রেকর্ড শীর্ষ সম্মেলনের পর সকল দেশ গুলো ঐকমত্য সম্ভব হওয়ায় উপস্থিত নেতারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন৷ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ বলেন, এটি ছিল ইউরোপের জন্য এক ঐতিহাসিক দিন৷ ইইউ-র বর্তমান সভাপতি দেশ জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল ঐকমত্য অর্জন সম্ভব হওয়ায় সন্তুষ্ট হয়েছেন৷ করোনা সংকট সামাল দিতে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যেই যে অভূতপূর্ব অর্থ জোগান দিতে রাজি হয়েছে। তার সম্পূরক হিসেবেই ইইউ এর সকল পদক্ষেপগুলো ইতিবাচক সারা পাবে বলে বলে সব পক্ষ আশা করছে৷