আজ ‘বিশ্ব রক্তদাতা দিবস’

শিপন নাথ: আজ ১৪ জুন। বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। যারা স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদান করে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ বাঁচাচ্ছেন, তাদেরসহ সাধারণ জনগণকে রক্তদানে উৎসাহিত করাই এ দিবসের উদ্দেশ্য।

১৯৯৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক রক্তদান দিবস পালন এবং ২০০০ সালে ‘নিরাপদ রক্ত’-এই থিম নিয়ে পালিত বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের অভিজ্ঞতা নিয়ে ২০০৪ সালে প্রথম পালিত হয়েছিল বিশ্ব রক্তদান দিবস। ২০০৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য অধিবেশনের পর থেকে প্রতিবছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এ দিবস পালনের জন্য তাগিদ দিয়ে আসছে।

প্রতিবছর ৮ কোটি ইউনিট রক্ত স্বেচ্ছায় দান হয়, অথচ এর মাত্র ৩৮ শতাংশ সংগ্রহ হয় উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে, যেখানে বাস করে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৮২ শতাংশ মানুষ। এ ছাড়া এখনও বিশ্বের অনেক দেশে মানুষের রক্তের চাহিদা হলে নির্ভর করতে হয় নিজের পরিবারের সদস্য বা নিজের বন্ধুদের রক্তদানের ওপর, আর অনেক দেশে পেশাদারি রক্তদাতা অর্থের বিনিময়ে রক্ত দান করে আসছে রোগীদের। অথচ বিশ্বের নানা দেশ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে জানা যায়, ‘নিরাপদ রক্ত সরবরাহের’ মূল ভিত্তি হলো স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে দান করা রক্ত। কারণ তাদের রক্ত তুলনামূলকভাবে নিরাপদ এবং এসব রক্তের মধ্য দিয়ে গ্রহীতার মধ্যে জীবনসংশয়ী সংক্রমণ, যেমন এইচআইভি ও হেপাটাইটিস সংক্রমণের আশঙ্কা খুবই কম। স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদানকারী আড়ালে থাকা সেসব মানুষের উদ্দেশে, এসব অজানা বীরের উদ্দেশে, উৎসর্গীকৃত ১৪ জুনের বিশ্ব রক্তদান দিবস। ১৪ জুন দিবসটি পালনের আরও একটি তাৎপর্য রয়েছে। এ দিন জন্ম হয়েছিল বিজ্ঞানী কার্ল ল্যান্ডস্টিনারের। এই নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেছিলেন রক্তের গ্রুপ ‘এ, বি, ও, এবি’।

আরও পড়ুন: এক নজরে বাজেট ২০২০-২১

 রক্তদানের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয়গুলো হলো:

  • রক্ত দিতে যাওয়ার আগে দেখে নিন আপনার জ্বর বা সর্দি কাশি আছে কি না।
  • কোনও অ্যান্টিবায়োটিক বা ইনসুলিন ট্রিটমেন্ট যাতে না চলে তা নিশ্চিত করুন।
  •  হার্টের সমস্যা, হাইপার টেনশন, মধুমেহ, ক্যান্সারের কোনো উপসর্গ, কিডনির অসুখ, বা কোনোরকম ক্রনিক অসুখ থাকলে রক্ত দিতে যাবেন না।
  • ছয় মাসের মধ্যে কোনোরকম অস্ত্রোপচার হলে রক্ত না দেওয়াই ভালো।
  • ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোনো ভ্যাকসিনেসন নেওয়া যাবে না।
  • অন্তঃস্বত্ত্বা অবস্থায় রক্ত না দেওয়াই ভালো।
  • যদি এর আগে রক্ত দিতে গিয়ে আপনি অজ্ঞান হয়ে গিয়ে থাকেন, তাহলে এখনই রক্ত না দেওয়া ভালো।
  • কোনোরকম ড্রাগ নিয়মিত সেবন করলে রক্তদান করবেন না।
  • রক্তের জন্য কোনো ওষুধ খেলে রক্তদান করবেন না।
  • আগের ৪৮ ঘণ্টায় অ্যালকোহল সেবন করা চলবে না।

এই বিষয়গুলি মাথায় রেখে আপনি রক্তদান করতে পারেন। তবে সবার আগে মেনে চলুন সুরক্ষাবিধি। রক্তদান পারে একটি জীবন বাঁচাতে। একটি জীবনকে তার পরিবারের কাছে পূর্ণ সুরক্ষার সাথে ফিরিয়ে দিতে। তাই রক্ত দানে আর ভয় নয়। রক্ত দিন, জীবন বাঁচান।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *