ইদুল আযহার আগে চট্টগ্রামে আর লকডাউন হচ্ছেনা; পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার শঙ্কা

ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম নগরীর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড ২১ দিনের জন্য লকডাউন করে সুফল পেয়েছিল প্রশাসন। প্রথম ১৪ দিনে ১৪৫ জন করোনা সংক্রমণ থেকে পরের ১৪ দিনে সেই সংক্রমণের সংখ্যা নেমে আসে মাত্র ১১ জনে। কাট্টলীর পর লকডাউন করার প্রস্তুতি ছিল চকবাজার ওয়ার্ড। পরে নেওয়া হয় ওয়ার্ডভিত্তিক না করে এলাকাভিত্তিক লকডাউন কার্যকর করার সিদ্ধান্ত। পরবর্তী লকডাউন কোথায় কোথায় হবে— ৮ জুলাইয়ের মধ্যে সেটা চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্তও ছিল। তবে সর্বশেষ ১২ জুলাই পর্যন্ত সংশ্লিষ্টরা ঠিক করতে পারেননি— নতুন করে কোন্ এলাকা লকডাউন হবে। অপরদিকে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। আবার ঈদের আগে লকডাউন না হওয়ার শঙ্কা জানিয়েছেন সিভিল সার্জন নিজেই।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশের আলোকে আমরা চসিকের ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড লকডাউন করেছিলাম। কাট্টলীর পর ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ড লকডাউনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু কাট্টলী ওয়ার্ড লকডাউন করতে গিয়ে কিছু সমস্যার মুখোমুখিও হয়েছিলাম। তখন জেলা সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ওয়ার্ড নয়, এলাকাভিত্তিক লকডাউনে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। এই লক্ষে সিভিল সার্জন কার্যালয় লকডাউনের নতুন রোডম্যাপ তৈরি করেছে। মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দিলে আমরা বাস্তবায়নে যাবো।’

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী বলেন, ‘আমরা লকডাউনের সুপারিশমালা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির কাছে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় এবং টেকনিক্যাল কমিটি সিদ্ধান্ত দেবেন। তখন আমরা বাস্তবায়নে যাবো।’

কাট্টলী লকডাউন শেষ হওয়ার আগে নতুন এলাকা লকডাউনের ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল। কখন নতুন এলাকা লকডাউন করা হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঈদের আগে হয়তো আর লকডাউনের কোনো সম্ভাবনা নেই। লকডাউন কার্যকরে অন্যান্য সংস্থার যে পরিমাণ সমর্থন দরকার, ঈদে সবারই নিজ নিজ দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ততা বাড়ার কারণে সেই সহযোগিতা পাওয়াটা কষ্ট হয়ে যাবে। তবে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দিলে তখন সবাই মিলে আমরা তা কার্যকর করবো।’

তবে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর লকডাউনের বিকল্প নেই জানিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়ন করা উচিত। কারণ কাট্টলী লকডাউন করে কার্যকর ফল পাওয়া গেছে। এখনই এভাবে উদাসীনভাবে সব ছেড়ে দিলে সামনে কোরবানির পশুর হাটসহ ঈদের অবাধ মেলামেশায় পরিস্থিতি আরো অবনতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, করোনা প্রতিরোধে গঠিত সরকারের কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটির ১৩ জুন তাদের দ্বিতীয় বৈঠকে ১০ জেলার রেড জোন নির্ধারণ করে তা লকডাউনের সুপারিশ করে। সেই সুপারিশ স্থানীয় প্রশাসন ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন শুরু করেছে। ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায় লকডাউন চলছে।

আরও পড়ুন: চবির ঝর্ণা কেড়ে নিল আরও এক প্রাণ

করোনা প্রতিরোধে গঠিত কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটি গত ১৩ জুনের সভায় চট্টগ্রাম সিটির ১০ এলাকাকে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করে। চট্টগ্রাম নগরীর এই ১০টি ওয়ার্ড হলো— ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড, ১৪ নম্বর লালখানবাজার ওয়ার্ড, ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ড, ২০ নম্বর দেওয়ানবাজার ওয়ার্ড, ২১ নম্বর জামালখান ও ২২ নম্বর এনায়েতবাজার ওয়ার্ড, ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর ওয়ার্ড, ৩৭ নম্বর উত্তর মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ড, ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ড এবং ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ড।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *