ইসলাম এবং ফরাসী মুসলিমদের নিয়ে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান করেছেন। তিনি বলছেন এই ধর্মটি সংকটে পড়েছে এবং একটি অংশ ফ্রান্সকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এছাড়া তিনি তার ভাষণে ইসলাম নিয়ে যেসব শব্দ বা বিশেষণ ব্যবহার করেছেন তার নজির ফ্রান্সে বিরল।
তিনি বলেন, যে সব গোষ্ঠী, প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি ফ্রান্সের ঐক্য এবং ফরাসী প্রজাতন্ত্রের ‘ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধকে’ হুমকিতে ফেলছে তাদের মোকাবিলার জন্য নতুন একটি আইন তিনি আনছেন। ফরাসী সমাজের ওই কথিত শত্রু হিসাবে তিনি পরিষ্কার করেই চিহ্নিত করেছেন ‘কট্টর ইসলাম’কে।
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, ফ্রান্সের ঐক্যের প্রধান বন্ধনই হচ্ছে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা।‘যারা ধর্মের নামে সেখানে ফাটল ধরাতে চায় তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়তে হবে,’ তিনি বলেন।
পুরো ভাষণে ম্যাক্রোঁ বলার চেষ্টা করেন, তিনি ইসলাম ধর্ম বা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নন। কিন্তু একইসাথে ইসলাম ধর্ম নিয়ে গভীর শঙ্কা প্রকাশ করেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট।
‘বিশ্বজুড়ে ইসলাম একটি সঙ্কটে পড়েছে, এমনকি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশেও এই ধর্মটি সঙ্কটে। এই ধর্মটিকে এখন আমাদের সাহায্য করতে হবে, যাতে তারা ফ্রান্স প্রজাতন্ত্রের অংশীদার হতে পারে। ফ্রান্সে এমন একটি ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে হবে যার ভিত্তি ‘জ্ঞানের আলো।’
এ প্রসঙ্গে তিনি ফ্রান্সে রাষ্ট্র থেকে গির্জাকে আলাদা করার ঐতিহাসিক আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।
ফরাসী রাজনীতিকদের মুখে ইসলামের সংস্কার, ফ্রান্সের রাজনৈতিক-সংস্কৃতির সাথে খাপ খায় এমন ইসলামের কথা নতুন নয়।
সাবেক ফরাসী প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজিও ‘ইসলাম পুনর্গঠনের’ পরিকল্পনা করেছিলেন। শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁর কণ্ঠেও একই ধরনের সুর শোনা যায়।
তিনি বলেন, ‘ফরাসী প্রজাতন্ত্রকে রক্ষা, এর মূল্যবোধ রক্ষা এবং সাম্য এবং মুক্তির জন্য প্রজাতন্ত্রের যে প্রতিশ্রুতি তা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা জরুরি।’
ফরাসী প্রেসিডেন্ট বলেন, ফ্রান্সের ৬০ লাখ মুসলিমের একটি অংশ একটি বিকল্প সমান্তরাল সমাজ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে, যা বিপজ্জনক।
‘সমস্যা হচ্ছে একটি (ধর্মীয়) মতবাদ নিয়ে যেটি দাবি করছে যে তাদের নিজস্ব আইন প্রজাতন্ত্রের আইনের চেয়ে শ্রেয় …বিদেশি প্রভাব থেকে ফরাসী ইসলামকে রক্ষা করতে হবে।’