কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে বিশাল আকৃতির মৃত ডলফিন

ছবিঃ সংগৃহীত

কক্সবাজারের টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ সমুদ্র উপকূলে বিশাল আকৃতির এক ডলফিনের মৃত দেহ ভেসে এসেছে।

সোমবার (২২ জুন) সকালে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ পশ্চিমপাড়া ঘোলার চর সমুদ্রসৈকতে ডলফিনের মৃতদেহটি উপকূলে ভাসতে দেখতে পায় স্থানীয়রা।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট কক্সবাজার কার্যালয়ের সিনিয়র সায়েন্টিফিক কর্মকর্তা ড. এহসানুল করিম বলেন, ‘ভেসে আসা মৃত ডলফিনটিকে স্থানীয়রা তিমি মাছ বললেও এটি মূলত হাম্পব্যাক প্রজাতির ডলফিন। ইন্দো-প্যাসিফিক বোতল নাক (হাম্পব্যাক) ডলফিন নামেও পরিচিত এটি। এই প্রজাতিগুলো দলবদ্ধ হয়ে চলাফেরা করে থাকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘৯-১০ ফুট উচ্চতার এই মাছটির ওজন ১৬০ কেজি হতে পারে। মূলত এই মাছগুলো ভারত এবং পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ক্রান্তীয় জলে পাওয়া যায়। তবে বেশিরভাগ সাধারণ বোতলজাতীয় ডলফিনের বিপরীতে, এই ডলফিনগুলি অগভীর, উপকূলীয় জল পছন্দ করে। ফলে এ মাছ আশেপাশের অঞ্চলে দেখা অস্বাভাবিক কিছু নয়।

পরিবেশবাদীরা জানান, ডলফিন খাবারের জন্য মাছের পালের পেছনে থাকে। জেলেরাও বিষয়টা জানেন। মাছধরার জন্য জেলেরা সাগরের ডলফিনের চারপাশে জাল দিয়ে ঘিরে ফেলেন। এ সময় জালে আটকা পড়ে ডলফিনগুলো মারা যায়।’

এদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সাইদুর রহমানের মতে ‘টেকনাফ সৈকতে মারা যাওয়া জলজ প্রাণীটি তিমি। এক্ষেত্রে তিনি কোন সন্দেহ রাখেন না। ছবি এবং ভিডিওতে এর বাহ্যিক গঠন দেখে সেটা নিশ্চিত হয়েছেন বলে মনে করেন এই অধ্যাপক।

তবে এটা কোন প্রজাতি সেটা নিশ্চিত করতে পারেন নি তিনি।

টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নুরুল আমিন জানান, তার এলাকায় সাগর সৈকতে একটি বড় আকারের মাছের মৃতদেহে ভেসে এসেছে। কেউ বলছে এটা তিমি মাছ, কেউ বলছে ডলফিন। তিনি বলেন, সাগরে জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ। তারপরও কিভাবে মাছটি মারা গেল তা বলা মুশকিল। তবে তিমি মাছটির দেহে বেশ কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

এ ব্যাপারে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত ইনচার্জ দীপক বিশ্বাস বলেন, সোমবার সকালে একটি মৃত তিমি ভেসে এসেছে। স্থানীয়দের সহযোগীতা নিয়ে তিমির মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, আগের দিন সেখানে একটি রক্তাক্ত সামুদ্রিক বড় মাছ দেখে স্থানীয় জেলেরা মাছটিকে গভীর সাগরে নিয়ে ছেড়ে দিয়ে আসে। সেই মাছটির মৃতদেহ ভেসে এসেছে বলেও ধারণা করছেন অনেকে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *