কবিতা চাষী’র কবিতা: কবির মৃত্যু

শহরজুড়ে শীত নেমেছে,

কৃষকের ঘরে নতুন ধানের উৎসব।

আকাশে আঁধো পূর্ণিমার আধপোড়া চাঁদ!

বাতাসে বাতাসে ভেসে আসে-

তরতাজা শিউলি আর

রাত জাগা শেয়ালের চিৎকার।

 

মাথার উপর দিয়ে পতপত করে উড়ে যায়,

নিশাচর বাঁদুর আর ভয়ানক পেঁচা।

 

মাঝরাত!

ঘরে বাজছে, হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ার মনমুগ্ধকর বাঁশিতে শীব-রঞ্জনী।

বাতাস থমকে আছে।

বাড়ির সবাই চুপচাপ নিঃশ্চুপ।

 

উঠানের উপরে পড়ে আছে চার-পায়ের একটা কাঠের চৌকি।

চারপাশে বসন্ত, শীত ও অন্য সময়ের সমস্ত ফুলের বেষ্টনী।

চৌকির মাঝ বরাবর, উপর থেকে ঝুলে পড়েছে, তাজা বেলির মালা।

সাদা বিছানার চাদরে শুয়ে আছেন কবি।

গায়ের উপরে সাদা একটা কাপড়!

বুকের উপরে গীতার পরিবর্তে রবিবাবুর শেষের কবিতা।

 

চাঁদ দেখতে আড়াল করেছে চোখের উপরে রাখা দুটি মরা ভ্রমর,

এটাও তুলসীর পরিবর্তে রাখা।

দু-কানের মাঝে লুকিয়ে আছে সাদা তুলার আস্তরণ।

চারিদিক থেকে সুঘ্রাণী ধুপবাতির মাতালীয় ঘ্রাণ আসছে নাকে।

হৃদয় থেমে আছে! তাই নাক অভিমানে বন্ধ করেছে,

তার শ্বাস-প্রঃশ্বাসের দরজা।

 

কিছু সময় পরে ভোরের আলোতে স্নান করবে,

তোমার স্বপ্নমাখা শহর।

তখন হয়তো কবির দেহ জ্বলবে আগুনে।

শহর ভুলে যাবে কবিকে

আর সময়ের চাবুকে তুমিও।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *