করোনামুক্ত পৃথিবীর দুয়ার নিউজিল্যান্ড!

নিউজিল্যান্ডে গত ১৭ দিনে একটিও করোনা পজিটিভের খবর মেলেনি। ওই সময় প্রায় ৪০ হাজার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। আর এ খবরে বেশ উৎসাহী দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডেন।

আগামীকাল মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে নিউজিল্যান্ডে খুলছে দোকানপাট, অফিস-কাছারি, শপিংমল, সিনেমা হল। অর্থনীতির চাকায় শান দিতে পর্যটন ক্ষেত্রকেও চাঙ্গা করার পরিকল্পনা শুরু হয়ে গেছে।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে লড়াই শুরু হয় নিউজিল্যান্ডের। ১৭ মার্চ ১২ জন আক্রান্তের খবর মেলে। ২৪ মার্চ ১০৩ জন। ২৮ মার্চ একেবারে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছায়। মাত্র ১৪৬ জন। তারপর এক সপ্তাহ একশোর নিচে। ৮ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ৫০ নিচে ছিল করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা। সেই শেষ। তারপর টানা ১৭ দিন কোনও করোনা সংক্রমণের খবর মেলেনি।

করোনার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ:

লকডাউন: গত ১৯ মার্চ ২৮ জনের করোনা পজেটিভের খবর মেলে। এরপরই আর্ডেন সরকার সিদ্ধান্ত নেয় সীমান্ত বন্ধ করার। একশো জনের বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

লেভেল ১-৩: ৪টি স্তরে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ২৩ মার্চ প্রাথমিক সতর্কতা জারি করা হলেও দুই দিন পরই লেভেল ৩ লকডাউন জারি করা হয়। অনিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যাবসা-বাণিজ্য, কোনও রকম জমায়েত, অনুষ্ঠান পুরোপুরি বন্ধ করা হয়। স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়।

লেভেল ৪: এরপরই লেভেল ৪ লকডাউনের পথে হাঁটে আর্ডেন সরকার। দেশজুড়ে সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা হয়। তখন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ২৮৩। উল্লেখ্য, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতেই ২৭ এপ্রিলে ফের লেভেল ৩ চলে আসে, অর্থাৎ বেশ কিছু ক্ষেত্রে লকডাউন শিথিল করা হয়।

গত ১৭ দিন করোনা সংক্রমণ না থাকায় লেভেল ১-এ ফিরে এসেছে নিউজিল্যান্ড। তবে, সংক্রমণ-আতঙ্ক একেবারে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। এখনও বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ কড়া করা হয়েছে।

সীমান্ত সিল: নিউজিল্যান্ডের মোট জিডিপির ৫.৮ শতাংশ আসে পর্যটন শিল্প থেকে। বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের এটিই অন্যতম মাধ্যম। কিন্তু লকডাউন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কেবল নিজের দেশে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয় নিউজিল্যান্ডের নাগরিকদের। তবে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকা ছিল বাধ্যতামূলক।

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, করোনাকে দূর করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু এখানেই লড়াই শেষ নয়। আমরা কত দিন করোনামুক্ত পরিবেশ রাখতে পারি, এটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই ধীরে ধীরে সবকিছু খুললেও, সেল্ফ কোয়ারেন্টিন থাকা, মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছেন তিনি।

সূত্র: জি নিউজ
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *