করোনা আক্রান্ত হওয়ায় বন্দর পরিচালনায় ১১ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আদেশ জারি

মোংলা বন্দরে উর্ধতন কয়েকজন কর্মকর্তা করোনা আক্রান্ত হওয়ার কারণে মোংলা বন্দর পরিচালনার জন্য ১১টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য আদেশ জারি করেছেন বন্দর কতৃর্পক্ষ। মরন ঘাতক করোনায় এক কর্মচারীর মৃত্য ও বন্দরের শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তাসহ অনেকে অসুস্থ হওয়ার পর সকল কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক প্রশাসন মোঃ গিয়াস উদ্দিন এ ১১টি সিদ্ধান্ত কার্যকরের আদেশ জারি করেছেন।

আদেশের প্রথম সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে নিরাপত্তা, ট্রাফিক, হারবার, মেডিকেল এবং যান্ত্রিক ও তড়িৎ বিভাগের কাজের পরিধি অনুযায়ী নুন্যতম লোকবল দিয়ে বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া অন্যান্য বিভাগের কাজ পালাক্রমে ২৫% লোকবল দিয়ে সম্পন্ন করতে হবে।

দ্বিতীয়, বিভাগীয় প্রধান ডিউটি রোস্টার প্রস্তুত করে দাপ্তরিক কাজ পরিচালনা করবেন।

তৃতীয়, আবশ্যিকভাবে মাস্ক পরিধান ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ যথা সময়ে সম্পন্নের ব্যবস্থা নিতে হবে।

চতুর্থ, বিভাগীয় প্রধানরা পেক্ষাপট বিবেচনা করে উত্থাপিত ও আহুত যে কোন বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

পঞ্চম, পরিচালন কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য গণপরিবহণের ব্যবহার পরিহার করার জন্য প্রয়োজনে বন্দরে অবস্থিত ডরমেটরী/রেস্ট হাউস অস্থায়ীভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

ষষ্ঠ, বন্দরের বিভিন্ন অফিস, জেটি ও আবাসিক এলাকায় প্রবেশের সময় প্রবেশ মুখে স্থাপিত ডিজইনফেকটেন্ট ট্যানেল আবশ্যিকভাবে ব্যবহার করতে হবে।

সপ্তম, আবাসিকের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বাসার বর্জ্য বাসভবনের নিচে স্থাপিত ড্রামে রাখতে হবে। সেগুলো নেওয়ার জন্য কেউই ভবনে উঠতে পারবে না।

অষ্টম, কর্তৃপক্ষের ব্যবহৃত গাড়ীগুলো প্রতিনিয়ত জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।

নবম, আবাসিক এলাকায় বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ করতে হবে।

দশম, অফিসসমূহ স্প্রে করে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

সর্বশেষ একাদশ, কর্তৃপক্ষের সাথে আর্থিক লেনদেন সম্ভব হলে ক্যাশ/নগদের পরিবর্তে ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পাদন করা যেতে পারে।

মহামারী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সোমবার বন্দরের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী তত্ত্ববাবধায়ক আমির হোসেনের মৃত্যু হয় । এছাড়া বর্তমানে আক্রান্ত রয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আলী, পরিচালক (প্রশাসন) গিয়াস উদ্দিন, হারবার মাষ্টার কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দিন, বন্দরের বোর্ড ও গনসংযোগ বিভাগের সচিব ওহিউদ্দিন চৌধুরী, প্রধান অর্থ ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান, পরিচালক (ট্রাফিক) মোস্তফা কামাল, সিভিল ও হাইড্রোলিক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাবেয়া রউফ, মোংলা বন্দর চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব মাকর“জ্জামান মুন্সী ও তড়িৎ ও বিদ্যুৎ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী উম্মে কুলসুম। গত সপ্তাহে তাদের স্বাস্থ্য পরিক্ষায় করোনা পজিটিভ আসলে এ সকল কর্মকর্তারা তারা নিজ নিজ বাসস্থানে আইসোলেশনে রয়েছে বলে বন্দর থেকে জানানো হয়েছে।

এছাড়াও বন্দরের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী সাধারণ জ্বর, মাথা ব্যাথা ও শাসকষ্ট নিয়ে অসুস্থ্য অবস্থায় ছুটিতে রয়েছে। তবে অসুস্থ্য ব্যাক্তিদেরসহ বন্দরের অন্যান্য শাখা থেকে করোনা ভাইরাস পরিক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে বন্দরের হারবার বিভাগ সুত্রে জানানো হয়েছে।

এদিকে, বেশ কয়েকদিন আগে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যাডমিরাল এম শাহজাহান করোনা পরিক্ষায় নেগিটিভ এসছে এবং তিনি সম্পুর্ণ সুস্থ্য রয়েছেন।

অপারদিকে, বন্দরের চেয়ারম্যানের পরে দ্বিতীয় শীর্ষ কর্মকর্তা (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) মেম্বার ইএনডি ইয়াসমিন আফসানা শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে তিনি তার বাস বভনে অবস্থান করছে। কিন্ত তিনি কি করোনায় আক্রান্ত হয়েছে অথবা করোনা পরিক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছে কিনা তা তিনি কিছুই বলেননি।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *