যৌগ হতে এর উপাদানসমূহকে যে পন্থায় পৃথক করা হয় তাকে ‘কলাম ক্রোমাটোগ্রাফি’ বলে। অধিশোষণ অথবা পোলারিটির মাত্রার উপর ভিত্তি করে যৌগে বিদ্যমান উপাদানগুলোর পৃথকীকরণ হয়ে থাকে। কলাম ক্রোমাটোগ্রাফিতে যৌগের উপাদানসমূহ ভিন্ন ভিন্ন হারে কলাম দিয়ে নিচে যেতে থাকে। এর ফলে উপাদানগুলোকে সহজে আলাদা করা যায়। কোন যৌগ হতে এর উপাদানসমূহ পৃথক করার জন্য কলাম ক্রোমাটোগ্রাফি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।
কলাম প্রস্তুতি সম্পাদনা প্রক্রিয়া :
এই প্রক্রিয়ায় সাধারণত ব্যুরেটকে কলাম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সর্বপ্রথম কলামের তলদেশে সামান্য পরিমাণে তুলা স্থাপন করা হয় যাতে কোন কঠিন পদার্থ ট্যাপের মাধ্যমে বাহিরে বের হয়ে যেতে না পারে। তারপর এর উপর সামান্য পরিমাণে বালি ঢালা হয় যার পুরুত্ব হবে ১ সে.মি. ।
অতঃপর, একটি বিকারে সামান্য পরিমাণ সিলিকা নেওয়া হয় এবং ইলুয়েন্ট (Eluent) নামক এক প্রকার দ্রাবক মিশিয়ে স্লারি (Slurry) প্রস্তুত করা হয়। অতঃপর কলামে স্লারিটি ঢেলে দেওয়া হয়। স্লারিটি সাবধানে ঢালতে হবে যেন কলামে কোন বায়ুর বুদবুদ সৃষ্টি না হয়। কলামে অতিরিক্ত ইলুয়েন্ট থাকলে তা ট্যাপের মাধ্যমে বাইরে বের করে দিতে হবে।
তারপর অপর একটি বিকারে যে যৌগটি পৃথক করতে চাই তা নিয়ে তার সাথে ইলুয়েন্ট মিশ্রিত করা হয়। অতঃপর ড্রপারের মাধ্যমে মিশ্রণটি কলামে ঢালা হয়। মিশ্রণটি ঢালার পর আবার এর উপর সামান্য পরিমাণে বালি ঢালা হয় যার পুরুত্ব হবে ১ সে.মি.। তারপর কলামটিকে আবার ইলুয়েন্ট দ্বারা পূর্ণ করা হয়।
কার্যপদ্ধতি সম্পাদনা :
কলামের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পরে ট্যাপের নিচে টেস্টটিউব অথবা কনিক্যাল ফ্লাস্ক স্থাপন করা হয় এবং কলামের ট্যাপটি খুলে দেওয়া হয়। এমতাবস্থায় অপরিশোধিত যৌগটিতে অবস্থিত উপাদানগুলো তাদের পোলারিটি অনুযায়ী ইলুয়েন্ট এ পৃথক হয়ে যায় এবং ট্যাপের মাধ্যমে টেস্টটিউব অথবা কনিক্যাল ফ্লাস্কে জমা হতে থাকে। অতঃপর ভিন্ন ভিন্ন কনিক্যাল ফ্লাস্কে ভিন্ন উপাদানগুলোকে পৃথক করে নেওয়া হয়।
কলাম ক্রোমাটোগ্রাফিতে মূলত দুটি দশা থাকে:
১) স্থির দশা (Stationary phase) এবং
২) চলমান দশা (Mobile phase)
এখানে স্লারি হল স্থির দশা। ইলুয়েন্ট এবং যে যৌগের উপাদানসমূহ পৃথক করতে হবে (অপরিশোধিত যৌগ) তা হলো চলমান দশা।
(বিজ্ঞান তথ্য সূত্রমতে)