বয়স সাড়ে তিন বছর, উচ্চতা প্রায় ছয় ফুট, আড়াআড়ি ৯ ফুট, ওজন ৩৬ মণ। এটি অন্য কিছু নয়, কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা একটি গোরু। স্থানীয়ভাবে যার নাম দেওয়া হয়েছে চিতা বাঘ। গোরুটির মালিক কায়নাথ শিকদার এটিকে বিক্রি করতে চান ১০ লাখ টাকায়।
বাড়িতে থাকা অবস্থায় আসন্ন ঈদুল আজহাকে ঘিরে এই ‘চিতা বাঘ’কে নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে খুলনায়। কেউ কেউ বলছেন, এটিই এবার জেলার অন্যতম বড় গরু বিবেচিত হতে পারে। বাজারে তোলার আগেই সিলেটের এক ব্যাপারী এর দাম হেঁকেছেন আট লাখ।
গোরুটির মালিক কায়নাথ শিকদার বলেন, ‘আমি নিজস্ব গোরু ফ্রিজিয়ান ক্রস ব্যবহার করে দুটি গোরু উৎপাদন করি। যার একটি বকনা ও একটি এই ষাঁড়। বকনাটি এখন দুধ দেয়, আর সেটি গাভীন। গোরুটির বর্তমান ওজন প্রায় ৩৬ মণ। স্বাভাবিকভাবে এ জাতের গোরু ২৮-৩০ মনের হতে পারে।’
তিনি আরও জানান, গোরুটি বড় করার ক্ষেত্রে তিনি স্বাভাবিকভাবে খড়, কুঁড়া, ভুষি, গম ভাঙ্গা, খৈলসহ প্রাকৃতিক খাবারই খাইয়েছেন। মোটাতাজা করণের বিশেষ কোনও পদ্ধতি তিনি ব্যবহার করেননি। গোরুটি তিনি ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করতে আগ্রহী। ক্রেতারা আসলে ১২-১৩ লাখ টাকা দাম হাঁকছেন। কোরবানি উপলক্ষে সিলেট থেকে আসা একজন গোরু ব্যাপারী এটির দাম আট লাখ টাকা বলেছেন। তিনি ১০ লাখ টাকার জন্য অপেক্ষা করছেন।
খুলনা জেলার অতিরিক্ত প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. অরুণ কান্তি মণ্ডল বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে খড়, কুঁড়া, ভুষির পাশাপাশি সয়াবিন খৈল খাওয়ালে গোরু মোটাতাজা করতে বিশেষ কোনও মেডিসিন প্রয়োজন হয় না।
তেরখাদা উপজেলার ভেটেরেনারি সার্জন জহিরুল ইসলাম বলেন, তেরখাদা উপজেলায় চার হাজার গোরু ও আড়াই হাজার ছাগল কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এ মজুদ দিয়ে তেরখাদার চাহিদা পূরণ করে বাইরে বিক্রি করা সম্ভব হবে। ‘ফ্রিজিয়ান জাতের গোরু স্বাভাবিকভাবে ৭শ থেকে ১৩শ কেজি পর্যন্ত ওজনের হয়ে থাকে। আর জিনগত পার্থক্যের কারণে এ জাতের গোরু ১৭শ – ১৮শ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।
আরও পড়ুন: যশোরে আইসোলেশনে নারীর মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ২৯
জানা গেছে, খুলনায় এ বছর গবাদিপশু পালনকারী খামারির সংখ্যা ছয় হাজার ৮৯০। যা গত বছর ছিল আট হাজার ১টি। গত বছর কোরবারির জন্য খুলনায় ৫১ হাজার ২৯৪টি পশু প্রস্তুত ছিল। এবার প্রস্তুত রয়েছে ৪৫ হাজার ১৪৮টি। এবার প্রস্তুতকৃত পশুর মধ্যে গোরু ৪০ হাজার ৯৬৮টি এবং ছাগল ও ভেড়া চার হাজার ১৮০টি রয়েছে। আর গত বছর প্রস্ততকৃত পশুর মধ্যে গোরু ছিল ৩৪ হাজার ৯৪১টি, ছাগল ১৫ হাজার ১০৮টি ও ভেড়া এক হাজার ২৪৫টি ছিল।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী. গত বছরের তুলনায় এবার খুলনায় খামারের সংখ্যা কমেছে এক হাজার ১১১টি। গত বছরের তুলনায় গবাদিপশু কমেছে ছয় হাজার ১০১টি।