গিবসন কি মাশরাফির অবসর চান?

২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ নিয়ে সব ক্রিকেট খেলুড়ে দেশই এখন পরিকল্পনায় ব্যস্ত। ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশও। আগামী বিশ্বকাপ নিয়ে হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো ছক কষা শুরু করেছেন এখনই। কিন্তু তার সেই ছকে নেই বাংলাদেশের সদ্য সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার নাম। বাংলাদেশ আইকনকে ছাড়াই আগামী বিশ্বকাপের পরিকল্পনায় ব্যস্ত ডোমিঙ্গো। তাই বাংলাদেশ দলের বোলিং কোচ ওটিস গিবসন চাইছেন মাশরাফি অবসর নিয়ে নিক। সম্প্রতি এক ইন্টারভিউতে আকার ইঙ্গিতে সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন তিনি। গত ফেব্রুয়ারিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোম সিরিজ শেষে নেতৃত্ব থেকে অবসরের ঘোষণা দেন মাশরাফি। এরপর জাতীয় দল থেকে অবসরের ব্যাপারে এখনো পরিষ্কার কিছু বলেননি।

বিপিএলের পরপরই গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশ দলের বোলিং কোচ হয়ে আসেন গিবসন। দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সাবেক কোচ জানান আগামী তিন বছরে ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য তরুণ পেসারদের নিয়ে কাজ করতে চান ডোমিঙ্গো। বোলিং কোচ গিবসনের নিজের ইচ্ছাও তাই। তার মানে হলো, প্রায় ৩৭ বছর বয়সী মাশরাফি নিশ্চিতভাবেই এই তরুণদের কাতারে পড়ছেন না।

গিবসন জানান, মাশরাফি চাইলে ভিন্নভাবে তরুণ পেসারদের উন্নতির লক্ষ্যে পরামর্শ দিতে পারে। নিজের সাক্ষাৎকারে গিবসন বলেন, মাশরাফি দুর্দান্ত আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার পেয়েছে। সে নিজেকে ও তার দেশকে গর্বিত করেছে। যেহেতু ২০২৩ বিশ্বকাপের আর তিন বছর বাকি, বিশ্বের যে-কোনো আন্তর্জাতিক কোচ চাইবেন ওই টুর্নামেন্টের জন্য এখনই দল তৈরি করতে। আমি নিশ্চিত রাসেল (ডোমিঙ্গো) এটাই ভাবছে। এজন্য আমরা বোলিংয়ে তরুণদের দেখতে চাই, যেমন হাসান মাহমুদ, সাইফুদ্দিন, শফিউল ইসলাম, এবাদত হোসেন। যদিও এবাদতকে আমরা এখনও ওয়ানডে ক্রিকেটে দেখিনি। এছাড়া তাসকিন, খালেদ আহমেদ, মেহেদী হাসান রানা আছে। তার মানে আমাদের হাতে অনেক তরুণ পেসার আছে। আমি নিশ্চিত- রাসেল এখন এই তরুণদের নিয়ে ভবিষ্যতের দল গড়তে চাইছে। জানি না এই পরিকল্পনায় মাশরাফির ভূমিকা কী থাকবে। আমার মনে হয় এখন মাশরাফির সামনে তাকানোর সময়, সে চাইলে তরুণ পেসারদের তার বিশাল অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করার দায়িত্বটা নিতে পারে। আর এটা সে মাঠে থেকে করতে পারবে না, অবশ্যই তাকে অন্য পথ বেছে নিতে হবে।’

বাংলাদেশ দলের বর্তমান কোচিং স্টাফদের মধ্যে গিবসনই প্রথম মাশরাফিকে একটু ঘুরিয়ে অবসরের পরামর্শ দিলেন। ২১৮ ম্যাচে ২৬৯ উইকেট নেওয়া মাশরাফি ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময় ইনজুরির কারণে মিস করেছেন। তবে ক্যারিয়ারের প্রথম ১০ বছরের চেয়ে পরের বছরগুলোয় নিয়মিত ছিলেন মাশরাফি। গত ৫ বছরে মাত্র ৫টি ম্যাচ মিস করেছেন তিনি। দুটি অধিনায়ক হিসেবে সেরা ওভাররেটের কারণে। ২০১৯ বিশ্বকাপে মাত্র ১ উইকেট পাওয়াই কাল হয়েছে মাশরাফির জন্য। এরপর থেকেই দলে তার জায়গা নিয়ে প্রশ্ন শুরু হয়। পাশাপাশি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর খেলোয়াড় হিসেব তিনি কতটুকু দিতে পারবেন সেই প্রশ্নও ওঠে।

গিবসন বোলিং কোচ হিসেবে বাংলাদেশ তরুণদের মধ্যে কার সম্ভাবনা বেশি দেখছেন, সেই কথাও জানান। তার পছন্দ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে অভিষিক্ত হাসান মাহমুদ। ঘরোয়া ও এ দলের হয়ে বেশ ভালো করেই জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন এই ২০ বছর বয়সী পেসার। এছাড়া ১৪০ গতিতে বল করা এবাদতও তার পছন্দের তালিকায়। জানান, ‘আমি এবাদতের ওপর সত্যিই সন্তুষ্ট, সে ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল করতে পারে। তাসকিন ইনজুরি থেকে ফিরেছে। সে আবার জাতীয় দলে ফিরতে খুব চেষ্টা করছে। তরুণদের  মধ্যে হাসান মাহমুদ আমাকে সত্যিই বিস্মিত করেছে। ওর ওপর আমি আস্থা রাখি যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আসার পর সে শীর্ষ বাংলাদেশি পেসার হবে। ওর শেখার আগ্রহ আছে আর বোলিং অ্যাকশনও দারুণ।’

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *