জবি ইতিহাস পরিবারের আয়োজনে ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইতিহাস পরিবারের উদ্যোগে ”বাংলাদেশের বিজয়ের ৫০ বছর: আদর্শ, ত্যাগ ও অর্জন শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭ টায় অনলাইন প্লাটফর্মে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক, ড. মোহাম্মদ সেলিম এর সভাপতিত্বে এই ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. চৌধুরী শহীদ কাদের।

ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান। এ ওয়েবিনারে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও ছাত্রছাত্রীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের দার্শনিক ভিত্তি ছিল অসাম্প্রদায়িক সাম্যের এবং বাঙালিত্বের বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধকালে মুক্তিযোদ্ধাদের একমাত্র চাহিদা ছিল স্বশাসন প্রতিষ্ঠা করা কিন্তু বর্তমান মুক্তিযোদ্ধাদের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯৭১ সালে আমাদের নানা সংকট থাকলেও আজকে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তবে আমাদের উন্নয়ন ও স্বয়ংসম্পূর্ণতার সাথে সাথে বৈষম্য কমিয়ে আনতে। বাঙালি সংস্কৃতি ও মরু সংস্কৃতির সমন্বয় না করতে পারলে বাংলাদেশ টেকসই রাষ্ট্র হবেনা। দেশের মন্ত্রীরা ভাস্কর্য ইস্যুতে মৌলবাদীদের সাথে যে আলোচনা কথা বলেন তা মোটেও কাম্য নয়।

ওয়েবিনারের মুখ্য আলোচক বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, বঙ্গবন্ধু ও ৩০ লক্ষ শহীদের যে স্বপ্ন ছিল তা বঙ্গবন্ধু হত্যার মাধ্যমে তা মাঝপথে হারিয়ে যায়। স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর পরিবর্তনের আশা থাকলেও বাংলাদেশ মিনি পাকিস্তানে পরিনত হয়। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে কথা বলা শাহ আজিজকে জিয়াউর রহমান প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন। স্বাধীনতা বিরোধী শর্ষীনার পীরকেও এদেশে স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়। আজকের বাংলাদেশ মুজিব কোর্টের অপব্যবহার হচ্ছে।

ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের নারী আন্দোলনের পথিকৃৎ ও সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মালেকা বেগম এবং গেরিলা যোদ্ধা ও চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু।

অধ্যাপক মালেকা বেগম তার বক্তব্যে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা মানেই শুধু পুরুষ নয়, পুরুষের ন্যায় লক্ষ লক্ষ নারী মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। বীরাঙ্গনা উপাধি দেওয়ার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

ওয়েবিনারের অন্যতম আলোচক নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, সংবিধানের চার মূলনীতির রাষ্ট্র পরিচালিত হচ্ছেনা এটা আমাদের জাতির জন্য একটি দীর্ঘশ্বাস। প্রতিটি মানুষের সামাজিক রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক অধিকার থাকার কথা কিন্তু তা নেই। ১৯৭২ এর সংবিধান বাস্তবায়ন না হওয়াতে মৌলবাদী শক্তি দেশে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার মতো আস্ফালন দেখানোর সুযোগ পাচ্ছে। আশার দিক হল বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং নারীর ক্ষমতায়ন সৃষ্টি হয়েছে।

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *