জবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে একাধিক জুনিয়র ছাত্রীকে যৌন হয়রানিমূলক ম্যাসেজের অভিযোগ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ম্যাসেঞ্জারে একাধিক জুনিয়র নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানিমূলক ম্যাসেজ প্রদানের অভিযোগ উঠেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) এর এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী তুহিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১১ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) রাতে ফেইসবুক আইডি থেকে তুহিনের যৌন হয়রানিমূলক ম্যাসেজের স্ক্রিনশর্ট প্রকাশ করেন ১ম বর্ষের এক ভুক্তোভোগী নারী শিক্ষার্থী। এতে দেখা যায়, অভিযুক্ত ছাত্র নারী শিক্ষার্থীকে কুরুচিপুর্ণ কথা ও কু-প্রস্তাব দেন। ঐ শিক্ষার্থীর স্ক্রিনশট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফেইসবুক গ্রুপে ছড়াছড়ি হওয়ার পর আরও একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে এমন অশালীন ম্যাসেজের খবর উঠে আসে।

একটি ফেইসবুক গ্রুপে ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী হয়রানির ঘটনা তুলে ধরে লেখেন, আমি উনার সাথে আগে কখনোই কথা বলি নাই, ডিপার্টমেন্ট এর সিনিয়র দেখে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট একসেপ্ট করছিলাম বাট এটাই আমার জন্য কাল হয়ে দাড়ালো। একটা অপরিচিত জুনিয়র মেয়েকে এভাবে হ্যারাজ করতে পারা মানুষ, না জানি কত মেয়ের সম্মান নিয়ে ছেলেখেলা করেছে।

পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি লেখেন, ছোটবেলায় ভাবতাম বস্তির ছেলেগুলো মেয়েদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করে কিন্তু এখন দেখি উল্টো। একজন মানুষ কতটা ভন্ড হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের  সর্বকনিষ্ঠ ব্যাচের মেয়ের ফিগার নিয়ে কথা বলতে পারে! এদের কি কখনোই শাস্তি হবে না? নাকি এরা সিনিয়র বলে আমরা বার বার চুপ থাকবো? জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কি আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারবে না? আমি চাই আজকে আমার সাথে যা হয়েছে সেটা যেন অন্য কোন বোনের সাথে না হয়। এই বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষগুলোকে জগন্নাথে মানায় না। আমি দৃঢ়ভাবে তার বহিষ্কার কামনা করছি। আশাকরি আপনারা আমার পাশে থাকবেন।

অভিযুক্ত তুহিনের বিরুদ্ধে আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আছে। তুহিন ও একনারী শিক্ষার্থীর ত্রিভুজ প্রেমকে কেন্দ্র করে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সংঘর্ষে জড়ায় জবি ছাত্রলীগ। এঘটনায় তৎকালীন তরিকুল-রাসেল কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তার ফেইসবুক প্রোফাইল থেকে জানা যায় সে ছাত্রলীগের সাথে জড়িত।

আরও পড়ুন: অনলাইনে মেস ভাড়া মওকুফের সুপারিশপত্র চালু করছে জবি

অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত তুহিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সে বিষয়গুলো এভাবে নিবে বা এভাবে রিএক্ট করবে আমি বুঝতে পারিনি। আমার এভাবে ম্যাসেজগুলো দেওয়া ঠিক হয়নি। আমি কোন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ম্যাসেজ দিছি সেটা আমার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখতে হবে,তার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে অনেকভাবে দেখা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা কামাল বলেন, ভুক্তভোগীর সাথে আমার কথা হয়েছে, তাকে অনলাইনে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। পাশাপাশি সাইবার ক্রাইম আইনে মামলা করতে বলেছি। সে যে থানায় মামলা করবে, আমরা সেখানে কথা বলবো। আর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী শাস্তির ব্যবস্থা করবো।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *