জার্মানিতে শীতের আবির্ভাব কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায়, আবারো করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জার্মানির বড় শহর গুলো যেমন বার্লিন, ফ্রাংকফুর্ট ও মিউনিখের করোনা সংক্রমণের হার বেড়েই চলছে। ইতিমধ্যে জার্মান চ্যান্সেলর মের্কেল বর্তমান পরিস্থিতিকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বলে আখ্যায়িত করেন এবং বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পরিস্থিতির অবনতি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন৷
শুরু থেকে করোনা মহামারি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেশ সফল ছিল জার্মানি কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি কিছুটা অবনতির দিকে এগিয়ে চলছে৷ গতকাল একদিনে নতুন সংক্রমণের ফলাফল প্রায় ৮,০০০ যা পূর্বের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতে গভীর দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী “ইয়েন্স স্পান”৷
তিনি এ প্রসঙ্গে কিছু মানুষের উদাসীনতাকেই দোষারোপ করেন৷ তিনি মনে করেন , দেশের স্বাস্থ্য সেবা কাঠামো বর্তমানে পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রস্তুত রয়েছে৷ সংক্রমণের হার আরো বাড়বে বলে মনে করছেন বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ এবং তারা আরও বলছেন গোটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চাপের মুখে পড়তে পারে। জার্মানির হাসপাতালগুলির আইসিইউ গুরুতর অসুস্থ করোনার রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে।
আঙ্গেলা মের্কেল আজ বার্লিন, হামবুর্গ, ব্রেমেন, মিউনিখ, ফ্রাংকফুর্ট কোলোন, ড্যুসেলডর্ফ, ডর্টমুন্ড, এসেন, লাইপজীশ ও স্টুটগার্ট শহরের মেয়রের সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে আলোচনা করবেন৷ বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাষ অনুযায়ী মার্চ মাসের তুলনায় আরও মারাত্মক দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সে বিষয়ে তাঁরা কথা বলবেন৷
বিভিন্ন শহর গুলোতে কিছু কড়া বিধিনিয়িম চালু করা হয়েছে৷ এর আওতায় রাত ১১টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বার ও রেস্তোরাঁ বন্ধ রাখা হচ্ছে।
তবে প্রথম সংক্রমণের মত এখন আর লকডাউন দেয়া সম্ভব হবে না বলে আশা করেছেন অনেকে৷ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত এক সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে আঙ্গেলা মের্কেল বলেন, করোনা সংকটের প্রথম ধাক্কা সামলাতে মার্চ মাসে কড়া বিধিনিয়ম চালু করা হয় তাতে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ অনেকটা কমে গিয়েছিল এবং তা ছিল জার্মানির জন্য মারাত্মক এবং ঐতিহাসিক মন্দা।
করোনা নিয়ে গবেষণা করছেন জার্মান হেলথ ইনস্টিটিউট রবার্ট কক্ষ-এর প্রধান লোটার ভিলার বলেন, আগামী কয়েক সপ্তাহে জার্মানির পরিস্থিতি ঠিক কোন দিকে যাবে, সে বিষয়ে কোনো সু-স্পষ্ট পূর্বাভাষ পাওয়া যাচ্ছে না৷ তাঁর মতে, দিনে ১০,০০০-এরও বেশি নতুন সংক্রমণ দেখা যেতে পারে, ভাইরাস লাগামহীন গতিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে৷
জার্মানির বিভিন্ন শহরের প্রবাসী বাংলাদেশীদের সাথে কথা বলে জানা যায়। দ্বিতীয় ধাপে বেশ কিছু বাঙ্গালিদের মধ্যে সক্রমন দেখা যাচ্ছে, তবে তারা এখন এই বিষয়ে বেশ সতর্ক রয়েছে ।