জার্মানির বাডেন-ভুর্টেমব্যার্গ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বোরখা-নিকাব নিষিদ্ধ

ফাইল ছবি

জার্মানির বাডেন-ভুর্টেমব্যার্গ রাজ্যে অবশেষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বোরখা-নিকাব পরা নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত চড়ান্ত করা হলো। তবে কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীদের আপাতত নতুন আইন থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসন জানিয়েছে, এখন থেকে স্কুলে বোরখা বা নিকাব পরে যাওয়া যাবে না। এমনকিছু পরা যাবে না, যা মুখ ঢেকে রাখে। এর আগে শিক্ষিকাদের জন্য এই নিয়ম জারি করেছিল রাজ্যটি।

জার্মানির পশ্চিম প্রান্তের এই রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় রয়েছে গ্রিন পার্টি। গত কয়েক মাস ধরেই ছাত্রীরা মুখ ঢেকে স্কুলে যেতে পারবে কি না, তা নিয়ে তর্ক- বিতর্ক চলছিল সেখানে।

ঘটনার সূত্রপাত হয় এক স্কুল ছাত্রীর একটি মামলাকে ঘিরে। হামবুর্গ আদালতে বোরখা বা নিকাব পরার বিষয়ে এক স্কুল ছাত্রীর করা মামলাকে ঘিরে ঘটনার সূত্রপাত হয়। দীর্ঘ আলাপ আলোচনার পরে আদালত জানায় রাজ্যের স্কুল আইন অনুযায়ী মুখ ঢেকে স্কুলে যেতেই পারে ছাত্রীরা। কিন্তু রাজ্য যদি স্কুল আইন বদলে ফেলে, সে ক্ষেত্রে নিয়মের পরিবর্তন হতে পারে।

আদালতের এই রায়ের পরেই প্রশাসন স্কুল আইন বদলের তোড়জোড় শুরু করে। আইন বদল হলেও বিষয়টি নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে বাডেন-ভুর্টেমব্যার্গ রাজ্যে।

গ্রিন পার্টির একাংশের বক্তব্য, বোরখা বা নিকাব ব্যক্তি স্বাধীনতার পরিপন্থী। কোনও গণতান্ত্রিক দেশে নারীদের মুখ ঢাকতে বাধ্য করা যায় না, যাবেও না । অধিকারের কথা ভেবেই এই ধরনের পোশাক নিষিদ্ধ করা উচিত।

কোনও কোনও রাজনীতিবিদ জানিয়েছেন, শুধু বাডেন-ভুর্টেমব্যার্গেই নয়, গোটা জার্মানিতেই বোরখা এবং নিকাব বাতিল করা উচিত।

আবার অন্যপক্ষের বক্তব্য, সকলেরই পোশাক নির্বাচনের অধিকার আছে। গণতান্ত্রিক দেশে সকলের ধর্মচর্চারও সমান অধিকার আছে। বোরখা বা নিকাব যেহেতু ধর্মীয় পোশাক  ফলে তা ব্যবহারের অধিকার সবারই রয়েছে।

আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে বিমান হামলা; নারী-শিশুসহ নিহত ৪৫

জানা যায়, বোরখা বা নিকাব নিয়ে বিতর্ক নতুন কিছু নয়। অতীতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এ বিষয়ে বিতর্ক হয়েছে। ইতিমধ্যে নেদারল্যান্ড, ডেনমার্ক, ফ্রান্স এবং অস্ট্রিয়ায় মুখ ঢেকে স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ হয়েছে। জার্মানিতেও সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ৫৪ শতাংশ নাগরিক বোরখা-নিকাব ব্যবহারের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে।

যদিও উদ্বাস্তুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা কোন কোন সংস্থার বক্তব্য, নতুন এই আইন দেশে সংখ্যালঘু এবং উদ্বাস্তুদের আরও কোণঠাসা করবে।

সে কারণেই আপাতত কলেজ স্তরের মেয়েদেরকে বিষয়টি থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *