ঝিনাইদহ সদর পৌরসভা নির্বাচন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিল, শহরে নিরাপত্তা জোরদার

ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহ সদর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন সিইসি। আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল খালেক প্রতীক পাওয়ার পর থেকে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার বিকালে এ সংবাদ পৌছালে নৌকার সমর্থকদের মধ্যে হতাশা ছড়িয়ে পড়ে। যখন তার প্রার্থীতা বাতিলে সংবাদ পাওয়া গেল তখন তিনি নির্বাচনী আইন ভেঙ্গে শহরের পায়রা চত্তরে এক প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তৃতা করছিলেন।

বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব মোঃ মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে নৌকার প্রতিকের প্রার্থীতা বাতিলের আদেশ দেওয়া হয়। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে ১৮ মে শোভাযাত্রা করে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী কাইয়্যুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করে। এঘটনায় নৌকার প্রার্থী আব্দুল খালেকের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং ভবিষ্যতে নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনে চলার অঙ্গিকার করেন। তারপরও গত ১ জুন বুধবার রাতে আবারো নৌকার প্রার্থী আব্দুল খালেকের সমর্থকরা প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী কাইয়্যুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজলের উপর হামলা করে জখম করে। উল্লেখিত কার্যক্রম নির্বাচন বিধিমালা ২০১৫ একাধিকবার লঙ্ঘন হয়েছে যা প্রমানিত। সেহেতু আব্দুল খালেকের প্রার্থীতা বাতিল করা হলো।

প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী নারিকেল গাছ প্রতিকের মেয়র প্রার্থী কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজলের উপর হামলা করে। এসময় মেয়র প্রার্থী হিজলসহ অন্তত ৮ জন আহত হয়। এরপর পরই নৌকার সমর্থকরা শহরে ঝটিকা মিছিল বের করে। মিছিলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এসময় শহরের চলাচলকারী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবার স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ও সমর্থকদের উপর হামলা করে। হামলায় কমপক্ষে ৮ জন আহত হয়। এ ঘটনায় থানায় ২২ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। এদিকে ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শহরের মোড়ে মোড়ে থানা পুলিশ ও ট্রাফিক ইউনিটের সমন্বয়ে চলছে চেকপোস্ট।

সদর থানার ওসি শেখ মো. সোহেল রানা জানান, প্রচারনা নিয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ঘটনার পর রাতেই আহত স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ২২ জনকে আসামী করে থানায় মামলা করা হয়েছে। তদন্ত পুর্বক মামলার আসামীদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে। ঘটনার পর থেকেই শহরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিভিন্ন অপ্রিতীকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, আগামি ১৫ জুন জেলার সদর পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বি করছে। প্রথম শ্রেণির এ পৌরসভায় নির্বাচিত হয়ে এক মেয়াদে দির্ঘ ১১ বছর দ্বায়িত্ব পালন করেছেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু। সর্বশেষ ২০১১ সালের ১৩ মার্চ এ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৬ সালের এপ্রিলে মেয়াদ শেষ হলেও মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় নির্বাচন হয়নি। দীর্ঘ ১১ বছর পর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে এক আদেশে ২০২১ সালে ২৪ নভেম্বর পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগ করা হয়।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *