টাঙ্গাইলে রোপা আমন ধান চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে

টাঙ্গাইলে রোপা আমন ধানের চাষ বেশি হওয়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। সেই সাথে ফলনও ভাল হয়েছে। তিন দফা বন্যার, দুই দফায় ব্যাপক ক্ষতি হলেও আমন ধান চাষ করায় লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে। কৃষি অফিস থেকে জানিয়েছে বন্যায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবার কৃষকদের নাবি জাতের আমন ধান চাষ করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, গত বছর জেলায় ৮৬ হাজার ৯০৬ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ৮৮ হাজার ২৫২ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছিল। চলতি বছর ৮৮ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে ৮৯ হাজার ৮৬১ হেক্টর জমিতে আমনের চাষ করা হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক হাজার ৬০১ হেক্টর বেশি। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৩৪ হাজার ১৯৩ মেট্রিক টন। তার মধ্যে সদর উপজেলায় ৩ হাজার ৮৫০ হেক্টর, বাসাইলে ১০৮ হেক্টর, কালিহাতীতে ৫ হাজার ৪৫ হেক্টর, ঘাটাইলে ১৭ হাজার হেক্টর, নাগরপুরে ২ হাজার ৩৫০ হেক্টর, মির্জাপুরে ৫ হাজার হেক্টর, মধুপুরে ১২ হাজার ৩৭৪ হেক্টর, ভূঞাপুরে ৫ হাজার ৮৪০ হেক্টর, গোপালপুরে ১০ হাজার ৬৫০ হেক্টর, সখীপুরে ১৫ হাজার ৭৪২ হেক্টর, দেলদুয়ারে এক হাজার ৬০৫ হেক্টর ও ধনবাড়ীতে ১০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। ফলনও ভাল হয়েছে।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ধরেরবাড়ী গ্রামের কৃষক ফরমান শেখ বলেন, এ বছর তিনি ৪৮ শতাংশ জায়গায় বর্গা ধান চাষ করেছেন। উচু জমি হওয়ায় বন্যার পানি প্রবেশ করেনি। তাই ফলন ভাল হয়েছে। ৪৮ শতাংশ জায়গায় প্রায় ৩০ মন ধান হবে। খরচ হয়েছে সব মিলে প্রায় সাত হাজার। আমার মতো গ্রামের অনেকেরই ধান ভাল হয়েছে। ভাটচান্দা গ্রামের কৃষক লাভলু মিয়া বলেন, এ বছর তিন বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করেছি। এক বিঘা বন্যায় নষ্ট হলেও দুই বিঘার জমির ধান ভাল হয়েছে। বালুচরা গ্রামের হুরমুজ আলী বলেন, চলতি মৌসুমে আড়াই বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। দফায় দফায় বৃষ্টি হওয়ায় পোকা মাকড়ের আক্রমন কম হওয়ায় রোগ বালাইও কম হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় ফলন ভাল হয়েছে।

টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আহ্সানুল বাসার জানান, টাঙ্গাইলে তিন দফা বন্যায় দুই দফায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাই কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষককে নাবি জাতের রোপা আমন (ব্রিআর-২২, ব্রিআর-২৩) চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। সর্বশেষ বন্যার পানি যে সময়ে নেমে গেছে ওই সময়ে নাবি জাতের ধানের চারা রোপনের সঠিক সময়। যে কারণে টাঙ্গাইলে আমন চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। নাবি জাতের ধানের কারণে কৃষকের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। এ বছর ২০ একর জায়গায় নাবি জাতের চারা বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *