দাঁড়াও পথিকবর; জন্ম যদি তব বঙ্গে! মধুমেলা উপলক্ষে বিশেষ আইন শৃঙ্খলা সভা

 

মহাকবি মাইকেল মধুসূদন এর স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী অঞ্চল যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাড়িতে অনুষ্ঠিত হবে বরাবরের মতো ২৫শে জানুয়ারি থেকে ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা। বাংলা সাহিত্যে মাইকেল মধুসূদন দত্ত (জন্ম: ২৫ শে জানুয়ারি, ১৮২৪; মৃত্যু ২৯ শে জুন, ১৮৭৩) এর মহান অবদানকে স্মরণপটে রাখতে যুগ যুগ ধরে আয়োজিত হয়ে আসছে এই মধুমেলা। বিশাল মধুমঞ্চেই হবে এই আয়োজনের প্রত্যহ সমারোহ। উল্লেখ্য করোনা নামক মহামারীর কারণে বিগত দুই বছর এই মেলা আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।

এবারের মেলায় বিশেষ আয়োজন এর ভেতরে আছে ম্যাগাজিন প্রকাশ _”মধুকর”! মধুসূদনকে নিয়ে লেখা কবিতা, ছন্দ, প্রবন্ধ, সমালোচনা ইত্যাদি সমন্বয়ে এই ম্যাগাজিন প্রকাশিত হবে। তাছাড়া প্রতিদিন থাকছে মধুসূদনের ব্যক্তিগত জীবন ও সাহিত্য পদচরণার বিভিন্ন কর্মকান্ডের উপরে আলোচনা অনুষ্ঠানের সাথে সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মধুমেলাতে অনুভব করা যায় একটা গ্রাম্য মেলার মত সকল ধরনের আনন্দ উৎসবের উপস্থিতি। বিভিন্ন ধরনের সঙ্গীতানুষ্ঠান, লোকগান, পুতুলনাচ, যাত্রাপালা, সার্কাস, নাগরদোলা, খেলনা, মিষ্টি-মিঠাই কি নেই এই উৎসবে! অনাদিকাল থেকে চলে আসা গ্রাম বাংলার যে সকল মেলাগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে তারই একটা স্বাদ ফিরিয়ে এনে দেয় এই মধুমেলা। তাছাড়া আরো রয়েছে কপোতাক্ষের তীর, মধুসূদন সংগ্রহশালা, মিউজিয়াম সর্বোপরি সানবাধা ঘাট ও প্রায় দুইশত বছরের পুরোনো বাদাম গাছ।

দর্শনার্থীদের মধুমেলা উপভোগ করতে যেন কোনো অসুবিধা ও বিড়ম্বনায় না পড়তে হয় তার জন্য সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন যশোর জেলা প্রশাসক জনাব তমিজুল ইসলাম খান। মঙ্গলবার বিকালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সাগরদাড়ি “মধুমঞ্চ মিলনায়তন” এ মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৯ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী “মধুমেলা” নিয়ে বিশেষ আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন ‘ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট’ এর মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে অংশ নেওয়ার জন্য। মধুমেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে ব্যাপকভাবে প্রস্তুতি।

কোন প্রকার জুয়া, ছিনতাই, মারামারি, বাজি, মাদক, সন্ত্রাস, নারী উত্তক্তকরণ ও অশ্লীলতা পরিহার করতে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি অন্য বারের তুলনায় আরো জোরদার করার পাশাপাশি গোটা মেলা ১০০ সিসি ক্যামেরার আওতায় এনে পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেনের সঞ্চালনায় এই সভায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস এম শাহীন, সহকারী পুলিশ সুপার মনিরামপুর সার্কেল, আশিক সুজা মামুন, কেশবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব কাজী রফিকুল ইসলাম, কেশবপুর পৌর মেয়র জনাব রফিকুল ইসলাম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ এস এম জিল্লুর রশিদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বাবু তপন কুমার ঘোষ, সাংগঠনিক সম্পাদক গৌতম রায়, কেশবপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আশরাফুজ্জামান খান ও প্রমুখ।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *