দেশের প্রথম হেলিপোর্ট নির্মাণ করতে যাচ্ছে বেবিচক

প্রতীকি ছবি সংগৃহিত

দেশের প্রথম হেলিপোর্ট টার্মিনাল নির্মাণ করতে যাচ্ছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।  রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছেই কাওলায় বেবিচকের নিজস্ব প্রায় ১শ বিঘার ওপর নির্মিত হবে এই হেলিপোর্ট টার্মিনাল।

আন্তর্জাতিক মানের এই হেলিপোর্ট নির্মাণ করতে ইতোমধ্যে পরামর্শকও নিয়োগ করেছে (বেবিচক)।

বেবিচক কর্মকর্তারা বলছেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গোলচত্বর লাগোয়া দক্ষিণে রেললাইনের পূর্ব পাশে বেবিচকের নিজস্ব জমিতেই হেলিপোর্ট টার্মিনাল নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫শ কোটি টাকা। টার্মিনাল নির্মিত হলে ৮০টি হেলিকপ্টার একসঙ্গে অবস্থান করতে পারবে।

এভিয়েশন বিশ্লেষকরা বলেছেন, অসহনীয় যানজট এড়াতে সামর্থ্যবান ব্যবসায়ী, চলচ্চিত্র নির্মাতা, হাসপাতাল মালিক ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিকল্প পথ খুঁজছে। এর ধারাবাহিকতায় কর্পোরেট লেভেলে বাড়েছ হেলিকপ্টারের ব্যবহার। ফলে হেলিপোর্ট নির্মাণ করা সময়োপযোগী পদক্ষেপ।

জানা গেছে, সিনেমার শ্যুটিং, রাজনৈতিক সভা সমাবেশে অংশগ্রহণ, রোগী আনা নেওয়া, বিভিন্ন কোম্পানির বোর্ড মিটিং থেকে শুরু করে ঢাকায় আসা-যাওয়ায় ব্যবহার হচ্ছে হেলিকপ্টার। কিন্তু প্রতিবার উড্ডয়নের জন্য বেবিচক থেকে অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু হেলিপোর্ট নির্মিত হলে প্রতিবার আর অনুমতি নিতে হবে না।

সংশ্লিষ্ট তথ্যমতে, এখন নয়টি প্রতিষ্ঠানের হেলিকপ্টারের লাইসেন্স রয়েছে। ইতোমধ্যে আরও কয়েকটি কোম্পানি লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে। যাচাই-বাছাই শেষে কয়েকটিকে লাইসেন্স দেওয়া হতে পারে।

জানা গেছে, এখন বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে হেলিকপ্টার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় কোম্পানি হলো সিকদার গ্রুপের মালিকানাধীন আরএনআর এয়ারলাইন্স। এখন তাদের সাতটি হেলিকপ্টার আছে।

এছাড়া সাউথ এশিয়ান এয়ারলাইন্সের চারটি, বসুন্ধরা গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ ও স্কয়ার গ্রুপের ৩টি করে হেলিকপ্টার রয়েছে। পিএইচপি গ্রুপের ও বাংলা ইন্টারন্যাশনালের ১টি হেলিকপ্টার রয়েছে। ২টি করে হেলিকপ্টার রয়েছে বিআরবি কেবলস, ইমপ্রেস এভিয়েশন ও এমএএস বাংলাদেশের। তার মধ্যে আরঅ্যান্ডআর, বিআরবি কেবলস, বাংলা ইন্টারন্যাশনাল, পিএইচপি এয়ারলাইন্সের শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হ্যাঙ্গার রয়েছে।

বেবিচক কর্মকর্তারা জানান, দেশে হেলিকপ্টার ব্যবহারের শুরুতে মাসে ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল গড়ে ৫শ থেকে এক হাজার। এখন তা বেড়ে মাসে পাঁচ থেকে ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম সাউথ এশিয়ান এয়ারলাইন্স নামে একটি কোম্পানি বাণিজ্যিক লাইসেন্স নিয়ে এ ব্যবসা শুরু করে। বেবিচকের হিসাব অনুযায়ী, এখন নয়টি কোম্পানির ২৭টি হেলিকপ্টার রয়েছে। কোম্পানিগুলো আরও হেলিকপ্টার আনার জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছে আবেদন করেছে।

জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মহিবুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী হেলিপোর্ট নির্মাণ করতে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন। হেলিপোর্ট টার্মিনাল নির্মাণকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা কাজ করছি।

বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যেই হেলিপোর্ট টার্মিনাল নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের পর হেলিপোর্ট নির্মাণ আমাদের এক নম্বর অগ্রাধিকার।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *