নিউজিল্যান্ডে আবারও করোনার আঘাত!

সম্প্রতি নিজেদের ‘করোনামুক্ত’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল নিউজ়িল্যান্ড। কিন্তু সপ্তাহ ঘোরার আগেই গত কাল আবার নতুন দুটি সংক্রমণের খবর; যা নিয়ে আজ নিজের প্রশাসনকেই দুষলেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডেন। তাঁর কথায়- বোঝাই যাচ্ছে, ভুলটা আমাদের। এটা মেনে নেওয়া যায় না। আগামী দিনে যাতে এমনটা না-ঘটে, তা নিশ্চিত করতেই হবে।

সম্প্রতি ব্রিটেন থেকে অস্ট্রেলিয়া হয়ে নিউজ়িল্যান্ডে ফেরা দুই মহিলার শরীরে সংক্রমণ মিলেছে। মৃত্যুপথযাত্রী আত্মীয়কে দেখতে অকল্যান্ডের আইসোলেশন-হোটেল ছেড়ে তাদের নিজেদের গাড়িতে ওয়েলিংটনের বাড়ি যেতে দেওয়া হয়েছিল মানবিকতার খাতিরেই। আজ জেসিন্ডা সরাসরি সেই সিদ্ধান্তের দিকে আঙুল না তুললেও জানান- কোয়ারেন্টিন-পদ্ধতি যথাযথভাবে মানা হচ্ছে কি না, এবার থেকে তা দেখবে সেনা। আর্ডেন বলেন, ‘গোড়া থেকে সীমান্তে কড়া নজরদারি চালিয়েই সাফল্য পেয়েছি। সেই কারণেই বিদেশ থেকে যারা ফিরছেন, তাদের সরকারি বন্দোবস্ত মানতেই হবে।

দ্বিতীয় দফার করোনা-ঝড় ভাবাচ্ছে চিনকেও। পাঁচ দিনে ১৩৭টি নতুন সংক্রমণের পরেই ফের নড়ে বসেছে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের প্রশাসন। দুটি প্রধান বিমানবন্দর থেকে ৭০ শতাংশেরও বেশি অন্তর্দেশীয় ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে বলে খবর। সংখ্যাটা প্রায় ১২৬০। বেজিংয়ের বেশ কিছু স্কুলও ফের বন্ধ হয়ে গেল আজ থেকে।

এত দিন কিছুটা স্বস্তির খবর আসছিল জার্মানি থেকে। গত ২৪ ঘণ্টায় সে দেশেও নতুন করে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩০ জনের। আবাসন ধরে ধরে বার্লিনের বেশ কিছু এলাকা কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে বলে খবর। আজই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে হন্ডুরাসের প্রেসিডেন্ট হুয়ান অর্ল্যান্ডো জানান যে, তাঁর করোনা-পরীক্ষার ফল পজ়িটিভ এসেছে। আক্রান্ত ফার্স্ট লেডিও।

আজই খবর মিলেছে— সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাড়িতে বসেছে জীবাণুনাশক সুড়ঙ্গ। ক্রেমলিনেও। সংক্রমণের নিরিখে রাশিয়া এখন তৃতীয়। আর এ জন্য পুতিনকেই বিঁধছেন বিরোধীরা।

আমেরিকায় মৃত্যুমিছিল বেড়েই চলেছে। আক্রান্ত ২২ লক্ষ ছাড়িয়েছে। মৃত প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার। জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষা বলছে— কিছু প্রদেশে কমলেও আলাস্কা, অ্যারিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া,ফ্লোরিডা, কানসাসের মতো ২১টি প্রদেশে গত এক সপ্তাহে নতুন সংক্রমণের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। দেশেরই একটি সমীক্ষা বলছে- আগামী অক্টোবরে মধ্যে মৃতের সংখ্যা ২ লক্ষ হবে। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স অবশ্য বলছেন, ‘দ্বিতীয় ঝড়ের কোনও ব্যাপারই নেই। সংবাদমাধ্যম ভয় দেখাচ্ছে মার্কিন জনতাকে।’ একটি কাগজে কলম ধরেন তিনি। প্রেসিডেন্টের সুরেই তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আগে তো রোজ আড়াই হাজার করে মৃত্যু হচ্ছিল, এখন সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে গড়ে ৭৫০! পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল।’

বিশ্বজোড়া ত্রাসের আবহে তাই প্রতিষেধকের অপেক্ষাই বড় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কাল স্টেরয়েড ডেক্সামেথাসোনকে ‘জীবনদায়ী’ হিসেবে দাবি করেছিল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। এই গবেষণার জন্য আজ তাদের অভিনন্দন জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও।

আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ লাখ ছাড়িয়েছে

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *