পরীক্ষা কক্ষে লাইভে এসেছি এটা আহামরি কিছু না

পরীক্ষার হলে ফেসবুকে লাইভ করলো ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক

পরীক্ষা কক্ষে ফেসবুকে লাইভে এসেছিলাম এটা আহামরি কিছু না। এটা খারাপ কিছু আমি মনে করছিনা। পরীক্ষা কক্ষে তখন আমাদের ম্যাডামরা ছিলেন। সেসময় আমি নিজের ফোন থেকেই ফেসবুকে লাইভ করি শনিবার দুপুরে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মনির হোসেন সুমন এমনটিই জানান।

ছাত্রলীগ সাধারন সম্পাদক আরো জানান, ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল একটা পদে থেকে কাজটা করা উচিৎ হয়নি। মানুষ একটা ভূল করলে তাকে যে পুতে চেপে ফেলে দিতে হবে বিষয়টা এমন না। তাকে সেভ করাই সংবাদ কর্মীদের কাজ। অথচ তারা সেভ না করে এটা প্রকাশ করে দিচ্ছে-বিষয়টা খুবই আশ্চর্য জনক।

শুক্রবার দেশ ব্যাপী কম্পিউটার অফিস এপ্লিকেশন ও গ্রাফিক্স ডিজাইন বিষয়ে ৬ মাস ও ৩ মাস মেয়াদী কোর্সের চুড়ান্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত লিখিত এবং ১১.৩০ মিনিট হতে দুপুর ১২.৩০ মিনিট পর্যন্ত প্রাকটিকাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কালীগঞ্জ উপজেলার প্রিজম কম্পিউটার একাডেমীর একজন পরীক্ষার্থী হিসাবে মনির হোসেন সুমন পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। প্রাকটিকাল পরীক্ষা চলাকালে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মনির হোসেন সুমন নিজের ফেসবুকে দুপুর ১২ টার দিকে লাইভ শুরু করেন, ৯ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডে তা শেষ করেন।

শুক্রবার ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পরীক্ষা কক্ষে দায়িত্বরত কালীগঞ্জ উপজেলার প্রিজম কম্পিউটার একাডেমীর শিক্ষক ও এ্যাকাউন্টেন্ট রেহেনা আক্তার নওরিন জানান, পরীক্ষার হলে ফেসবুকে লাইভ করার সময় মনির হোসেন সুমন আমাকে ফোনটা দিয়ে বলেন আমি পরীক্ষা দিচ্ছি আমাকে একটু ভিডিওতে দেখান। ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক তো, সে অনেক সাহসি ছেলে। যেহেতু ছাত্রলীগ করে, সাধারন সম্পাদক প্রধান সেহেতু সে ফোনটা দিলে আমি ধরতেই পারি। পরীক্ষা কক্ষে লাইভ করা ঠিক না, তবে পরীক্ষার শেষের দিকে হওয়াই সে ফেসবুকে লাইভ করছিল। মজার ছলেই সে এটি করেছিল।

বিষয়টি নিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসান নাজিমের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে জেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি রানা হামিদ জানান, আমি তো সাবেক অবস্থায় আছি তা না হলে এতো সময় মনির হোসেন সুমনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক যে ব্যবস্থা নেওয়ার সেটা আমি নিয়ে নিতাম। এখন সাবেক হিসাবে আমার দাবি তাকে দল থেকে বহিষ্কার সহ আরো যদি সাংগঠনিক কোন ব্যবস্থা নেওয়ার থাকে তাহলে সেটা নেওয়া উচিত। কারন ও পুরো ছাত্রলীগকেই কলঙ্কিত করে ফেলেছে। পরীক্ষার হলে সুমন লাইভ করে শিক্ষা ব্যবস্থাটাকে যে কোথায় নিয়ে গেল তা বলার নয়। এটার জন্য আমরা চরম ভাবে দু:খিত।

এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার বলেন, একজন স্বুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ এটা করতে পারে না। আর একজন ব্যক্তি যদি নিজের ফেসবুকে পরীক্ষা কক্ষে লাইভ করে কিংবা কিছু করে তাহলে তার দায়ভার দল নিতে পারে না। তবে বিষয়টা আমি জেনেছি, সাংগঠনিক ভাবে কি করা যায় সেটা দেখছি।

ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একাডেমীক ইনচার্জ মাহবুব উল ইসলাম জানান, বিষয়টি নিয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন পাওয়ার পরই পরবর্তি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *