পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মদক্ষতার ওপর বাজেট বরাদ্দ: ইউজিসি

এক বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবিধা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রযোজ্য নয়। আগামী অর্থবছর থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মদক্ষতা যাচাই করে বাজেট বরাদ্দের কথা ভাবছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন। একইসঙ্গে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহকে সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে তুলতে গবেষণায় বরাদ্দের পরিমাণও বৃদ্ধি করা হবে বলে জানিয়েছে ইউজিসি।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের বাজেট সংক্রান্ত দু’দিনব্যাপী  সভার সমাপনী  দিনে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানায় ইউজিসি।

ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ প্রধান অতিথি হিসেবে সভায় ভার্চুয়ালি যোগদান করেন। কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের- এর সভাপতিত্বে বাজেট সভায় ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর ও প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কমিশনের সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামান। এছাড়া, সভায় ইউজিসি’র বিভাগীয় প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।

ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক শৃঙ্খলা খুবই দরকার। আর্থিক কাজে ভুলের কোন সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখাতে এক পয়সা পর্যন্ত ছাড় দেওয়া যাবে না। তবে বাজেটে বরাদ্দকৃত টাকা যাতে অলসভাবে পড়ে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে তিনি পরামর্শ দেন। এসময় তিনি সকলকে বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের আইন-কানুন মেনে এবং ইউজিসি’র অনুমোদন নিয়ে দাপ্তরিক কাজ সম্পাদন করার অনুরোধ করেন।

সভাপতির ভাষণে প্রফেসর ড. আবু তাহের বলেন, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ যাতে সেন্টার অব এক্সিলেন্স হয়, শিক্ষায় গুণগতমান বজায় রেখে এগিয়ে যায় এবং বিশ্ব র‍্যাঙ্কিং এ সম্মানজনক স্থান করে নিতে পারে সেজন্য গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামী বাজেট বরাদ্দ বিষয়ে তিনি বলেন, কর্মদক্ষতা মূল্যায়ন করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে বাজেট বরাদ্দের কথা ভাবছে কমিশন। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মদক্ষতা কমে গেলে সামগ্রিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নিচে নেমে যায়।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তাদের অভিন্ন গ্রেড ও বেতন নির্ধারণ দাবি বিষয়ে তিনি বলেন, এক বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ-সুবিধা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া যাবে না। কারণ, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব আইন ও বিধি-বিধান দিয়ে পরিচালিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন মানে যথেচ্ছা নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন শুধুমাত্র একাডেমিক ক্ষেত্রে, আর্থিক বিষয়ে প্রযোজ্য নয়। আর্থিক বিষয়ের জন্য অবশ্যই ইউজিসি’র অনুমোদন নিতে হবে। এসময় তিনি সিনেট-সিন্ডিকেটে অর্থ সক্রান্ত বিষয় পাশ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সরকারের আর্থিক বিধি-বিধান ও পে-স্কেল অনুসরণের পরামর্শ দেন।

সভায় প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে। স্ট্রাটেজিক প্লান ফর হায়ার এডুকেশন ইন বাংলাদেশ-২০৩০ এ শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে অবশিষ্ট ২৩ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক ও বাজেট কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। সভায় ২০২০-২০২১ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট এবং ২০২১-২০২২ অর্থবছরের মূল বাজেটের সুবিধা-অসুবিধা ও সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *