প্রতীক্ষিত ভ্যাকসিন : বিশ্ববাসীর জন্য সুখবর আসছে

প্রায় তিন মাসের বেশি সময় ধরে একটি ভ্যাকসিনের জন্য অপেক্ষা করছে বিশ্ববাসী। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গবেষকরা চেষ্টা করেও এখনও পর্যন্ত শতভাগ সফল হতে পারেননি। ফলে মরণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রতিষেধকের জন্য অপেক্ষা শেষ হচ্ছে না।

তবে এবার সম্ভবত সেই প্রতীক্ষা শেষ হচ্ছে। বিশ্ববাসীর জন্য আপাতত সুখবর হলো- সম্ভাব্য ভ্যাকসিন পরীক্ষার ফল আগামী জুনের মাঝামাঝি সময়ে জানা যাবে।

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ওষুধ বিভাগের প্রফেসর ও যুক্তরাজ্য সরকারের করোনাভাইরাস টাস্কফোর্সের সদস্য স্যার জন বেল জানান, ‘স্বেচ্ছাসেবীদের কেউ এ রোগে আক্রান্ত হন কি না, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করছেন গবেষকরা।’

ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো জানায়, ব্রিটেনে তিন সপ্তাহ আগে মানবদেহে সম্ভাব্য করোনা ভ্যাকসিনের পরীক্ষা শুরু হয়। এখন পর্যন্ত কয়েকশ স্বেচ্ছাসেবীর দেহে পরীক্ষামূলকভাবে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে। অর্ধেক স্বেচ্ছাসেবককে সম্ভাব্য করোনা ভ্যাকসিন ও অন্যদের নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ হিসেবে ম্যানিনজাইটিস ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে।

স্যার জন জানান, অক্সফোর্ড অধ্যাপক সারাহ গিলবার্টের নেতৃত্বে প্রকল্পটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সম্ভাবনাময় অবস্থায় আছে।

বিবিসি রেডিওকে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন অ্যাডভোকেসি সংকেতের জন্য অপেক্ষা করছি। যাদেরকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, তারা রোগটিতে আক্রান্ত হন কি না, সেটি দেখার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

তবে স্বেচ্ছাসেবকরা প্রাকৃতিকভাবে এই রোগে সংক্রমিত না হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে জানিয়ে স্যার জন বলেন, ‘আমরা এ বিষয়টি নিয়ে হিসাব করছি। আশেপাশের মানুষের মধ্যে সংক্রমণ কমে যাওয়ার কারণেও স্বেচ্ছাসেবকরা আক্রান্ত নাও হতে পারেন। তাদের পরিবেশে বর্তমানে কী পরিমাণ সংক্রমণ ঘটছে এ সম্পর্কে তথ্য বের করার চেষ্টাও চলছে।’

ইচ্ছাকৃতভাবে স্বেচ্ছাসেবকদের করোনা ভাইরাসের সংস্পর্শে নিয়ে যাওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে এমন সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করে দেন তিনি। বলেন, ‘ভ্যাকসিনটি যদি কাজ না করে, তবে স্বেচ্ছাসেবকদের মৃত্যুর ঝুঁকিও আছে।’

সারাহ গিলবার্টের নেতৃত্বে গবেষণা দলটি আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভ্যাকসিনটি ১ মিলিয়ন ডোজ উৎপাদনের আশা করছে। ইতোমধ্যেই অ্যাস্ট্রাজেনেকা নামের ফার্মাসিউটিকাল ও বায়োফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থা তাদের অংশীদার হয়েছে। এদের মাধ্যমে দ্রুত উৎপাদন বাড়ানো যাবে।

স্যার জন বলেন, ‘আমরা এটা নিশ্চিত করতে চাই যে, বিশ্বের অন্যান্য দেশও যেন ভ্যাকসিনটি প্রস্তুতের জন্য তৈরি থাকে। এতে করে উন্নয়নশীল রাষ্ট্র, যেখানে ভ্যাকসিনের প্রয়োজন তুলনামূলকভাবে বেশি সেখানকার মানুষও যেন সেটা পায়।’

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *