আগামী ২০ শে অক্টোবর প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস এবং ১৬২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ।
বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) উপাচার্যের মহোদয়ের আদেশক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো: ওহিদুজ্জামানের স্বাক্ষরিত ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞাপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। ২০ অক্টোবর, ২০২০ (৪ কার্তিক) মঙ্গলবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়- ২০২০ তথা ১৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে মহামারী করোনার কারণে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্বল্প পরিসরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানসূচির মধ্যে রয়েছে সকালে শহীদ মিনার চত্বরে জাতীয় পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনা (১০ টা ১০), বেলুন উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শুভ উদ্বোধন (১০ টা ১৫), জবির একমাত্র হল প্রাঙ্গণে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শুভ উদ্বোধন (১০ টা ৩০) করবেন অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান (মাননীয় উপাচার্য)। যা ২০১৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়েছিল। সকাল ১১ টা ৩০ থেকে বেলা ১২ টা ৩০ পর্যন্ত ভার্চ্যুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান ও সভাপতিত্ব করবেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ। এরপর বেলা ১২ টা ৩০ থেকে বেলা ২ টা ৩০ পর্যন্ত সঙ্গীত বিভাগের আয়োজনে রয়েছে ভার্চুয়াল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ হচ্ছে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি । বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৮৫৮ সালে ঢাকা ব্রাহ্ম স্কুল নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে এবং ১৮৭২ সালের দিকে এটি একটি স্কুল ছিল। এবং এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন বালিয়াটির জমিদার কিশোরীলাল রায়চৌধুরী তিনি এর নামকরন করেন তার বাবার নামে , জগন্নাথ স্কুল।১৯০৮ সালে প্রথম শ্রেণীর কলেজে পরিণিত হয় এই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। তবে ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে তৎকালীন জগন্নাথ কলেজের স্নাতক কার্যক্রমের সাথে সাথেই অন্যান্য যেমন অনার্স এবং ইংরেজির মাস্টার্স, দর্শন ও সংস্কৃতির শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং ইন্টারমিডিয়েট কলেজ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ করা হয়। তবে ১৯৪৯ সালে আবার কলেজটিতে স্নাতক পাঠক্রম শুরু হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ের সকল রকমের আন্দোলন ও সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ এবং এতে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ । এই প্রতিষ্ঠানটি ২০০৫ সালে জাতীয় সংসদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ পাশের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়।
করোনাকালীন সময়ে জাঁকজমকপূর্ণভাবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করা না গেলেও এবারের প্রধান আকর্ষন থাকছে জবি একমাত্র হল উদ্বোধন। দীর্ঘ ১০ বছর পর জবির একমাত্র ছাত্রী হলটি উদ্বোধনের পথে। ২০ তলা ভিত্তির ওপর ১৬ তলা ভবনের হলটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। ৩৬ মাসে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ভার দেয়া হয়েছিল শিক্ষা প্রকৌশল দফতরের ওপর। ১১১টি কক্ষবিশিষ্ট হলটিতে একটি লাইব্রেরি, একটি ক্যান্টিন, একটি ডাইনিং, প্রতি তলায় সাতটি করে টয়লেট, আটটি গোসলখানা, ছাত্রীদের ওঠা নামার জন্য চারটি লিফট স্থাপন করা হয়েছে। হলটিতে এক হাজার ছাত্রীর থাকার জন্য রয়েছে সুব্যবস্থা।
ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সীমিত পরিসরে আয়োজনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ।