বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতাকারীদের পরাজিত করা হবে: কৃষিমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুর

বঙ্গবন্ধুর

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের অন্যতম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে নয় মাস ব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে যেভাবে পাকিস্থানী ও তাদের দোসরদের পরাজিত করা হয়েছে তেমনিভাবে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতাকারীদের পরাজিত করা হবে।

মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে যেমন ধ্বংস করা যাবে না, তেমনি কেউ যদি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধীতা করে বা ভাঙে তাহলে তাদেরকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মতো মোকাবেলা করে আবার পরাজিত করা হবে। তাদেরকে আবার আমাদের পায়ের নিচে পড়ে ক্ষমা চাইতে হবে।

শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে টাঙ্গাইল পৌরসভা আয়োজিত টাঙ্গাইল হানাদারমুক্ত দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী একথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, ভাস্কর্য ও মূর্তি এক নয়। ভাস্কর্যের একটা নান্দনিক দিক রয়েছে, এটি একটি শিল্প। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হচ্ছে যাতে করে তাঁর আদর্শ ও চেতনাকে এ দেশের ভবিষ্যত বা আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা যায়, জাগরূক রাখা যায়। ভাস্কর্য হচ্ছে স্মৃতিচিহ্ন বা স্মারক। এর মাধ্যমে ভবিষ্যত প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হবে এবং মানবপ্রেমে ও মানবসেবায় ব্রতী হবে। একাত্তরে নয় মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে যেভাবে পাকিস্থানী ও দোসরদের পরাজিত করেছি। তারা আমাদের পায়ের নিচে অস্ত্র সমর্পণ করেছে। আজকে যারা মনে করছে এ দেশকে পাকিস্থানের ধারায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। তালেবানীয় আফগানিস্থান বানাবে, ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাবে তাদেরকে আমরা একাত্তরের মতো পরাজিত করব।

কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য যারা ভেঙেছে তাদের বিচার বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী তাদের এই কাজ রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। এই আইনেই তাদের বিচার হবে। তাদেরকে অবশ্যই বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরে বিএনপি জড়িত ও তাদেরকে বিচারের আওতায় আনার বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিএনপি এদের সাথে জোট করে ক্ষমতায় এসেছিল। ভাঙচুরে অবশ্যই তাদের যোগসাজশ আছে। কিন্তু বিচার করতে গেলে প্রমাণ লাগে। ডিজিটাল যুগে প্রমাণসাপেক্ষে অবশ্যই তাদের বিচার হবে। তারা যদি অর্থ দিয়ে থাকে বা অন্যভাবে সহযোগিতা করে থাকে। তবে অবশ্যই তাদের বিচার হবে। যারা যারা অপরাধ করেছে তারা কেউই রেহাই পাবে না।

কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু এ দেশটিকে শুধু স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে চাননি। তিনি এটিকে বলেছিলেন মুক্তির সংগ্রাম। দেশটিকে তিনি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিকসহ সব দিক দিয়ে স্বাধীন করতে চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং ন্যায়-সমতার ভিত্তিতে একটি অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী পরাজিত শক্তি দেশিয়-আন্তর্জাতিক ঘাতকচক্র ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। তারপর থেকে ২১ বছর ধরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করেছে। যার ধারাবাহিকতা হলো বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা ও ভাঙচুর।

আরও পড়ুন: টাঙ্গাইল হানাদারমুক্ত দিবসে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের শ্রদ্ধাঞ্জলি

টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরনের সভাপতিত্বে সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন, তানভীর হাসান ছোট মনির এমপি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

উল্লেখ্য, আজ টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বরে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে টাঙ্গাইলকে মুক্ত করে। ১১ ডিসেম্বর সকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বর্তমানে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি বিশাল বাহিনী নিয়ে টাঙ্গাইল শহরে প্রবেশ করেন এবং থানা চত্বরে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *