বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুর নির্মান কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

দীর্ঘ প্র্রতিক্ষার পর অবশেষে কাজ শুরু হতে যাচ্ছে বহুল প্রতিক্ষিত যমুনা নদীর উপর রেল সেতুর নির্মান কাজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৯ নভেম্বর গণভবন থেকে ভিডিও কনফরেন্সের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুর নির্মান কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিফলক উম্মোচন করবেন।

দাতা দেশ জাপানের সহায়তায় ২০২৪ সালে সেতুটির নির্মান কাজ শেষ হলে দেশের রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটবে। এই রেল সেতু দেশের মানুষের কাছে আশীর্বাদ হিসেবে ধরা দিবে বলে মনে করছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

যমুনা নদীর উপর নির্মিত টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার দুই পাড়ে বঙ্গবন্ধু সেতু বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে দুই অংশকে একত্রিত করেছে। সড়কের পাশাপাশি সেতুতে রেল সংযোগও রয়েছে। কিন্তু সেতুতে রেল চলে কচ্ছপ গতিতে।

এর আগে কয়েকবার সেতুতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন যাত্রীরা। রেল চলাচল করায় বঙ্গবন্ধু সেতু রয়েছে হুমকীর মুখে। সেতুর উপর ধীর গতিতে রেল চলায় ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের।

বঙ্গবন্ধু সেতুকে রক্ষাকরণ, যাত্রীদের দুর্ভোগ দূর করতে ও দেশের রেল যোগাযোগ আরো উন্নত করার লক্ষে সরকার যমুনা নদীর উপর আলাদা রেল সেতু নির্মান করা উদ্যোগ নিয়েছে। যমুনা নদীর উপর নতুন রেলসেতু নির্মাণের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নত হবে।

এতে করে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে আর্থিক সচ্ছলতা বাড়বে। এ কারণে খুশী রেলের যাত্রীরা।

যমুনা নদীর উপর নির্মিত নতুন এ রেল সেতুর দৈর্ঘ হবে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর দিয়ে প্রতিদিন ১৬ জোড়া রেল পারাপার হয়। বঙ্গবন্ধু সেতুতে সর্বোচ্চ ২০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে রেল। এছাড়া সিগন্যালের জন্য অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ সময়। এতে দুভোর্গের সীমা থাকে না রেল ষ্টেশনের কর্মী ও যাত্রীদের। রেলসেতু নির্মাণ করা হলে কোনো ট্রেনেই কোনো প্রকার সিডিউল বিপর্যয় ঘটবে না। এতে উপকৃত হবে সকলেই।
উদ্বোধন উপলক্ষে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানান, ২৯ নভেম্বর সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফরেন্সের মাধ্যমে যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুর নির্মান কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিফলক উম্মোচন করবেন। ইতিমধ্যে রেলপথ মন্ত্রী ও রেলওয়ে বিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা রেল সেতু নির্মানের স্থান পরিদর্শন করেছেন। অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রস্তুতি সভা।

রেলমন্ত্রী আরও জানান, বন্ধু প্রতিম দেশ জাপানের জাইকার সহযোগীতায় এ নতুন রেল সেতু নির্মাণ হবে। সেতুটির নির্মাণকাজ দুটি ভাগে হবে। একটি টাঙ্গাইল অংশে, অন্যটি সিরাজগঞ্জ অংশে। রেল সেতু প্রকল্পের বাইরেও আরেকটি প্রকল্পে গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এর ফলে একটি লাইনে রেল ঢাকার দিকে যাবে। আরেকটি লাইন দিয়ে বিপরীত দিকে যাবে।

একই সঙ্গে রেলপথের মাধ্যমে ভারি মালামাল পরিবহনে কন্টেইনার পরিবহন বাড়বে। বাংলাদেশ রেলওয়ের কন্টেইনারসমূহ দেশ-বিদেশে পরিবহন করা হবে। ১০০ কিলোমিটার গতিতে সেতুর ওপর দিয়ে রেল চলাচল করতে পারবে। জাপানের আর্থিক সহায়তায় এর নির্মাণ ব্যায় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। আগামী ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে রেলসেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ হবার পর সরকার দেশের উত্তরাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থায় দ্রুতগামী রেল সুবিধা ব্যবস্থা যুক্ত করবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *