বন্যায় বিপাকে পড়েছে জবি শিক্ষার্থীরা!

বন্যায় ভাসছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। পানিবন্দী অবস্থায় বিশাল জনগোষ্ঠী। দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। জানা যায়, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ অধিকাংশ নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক লাখ মানুষ। এসব এলাকার সাধারণ মানুষের মতো বিপাকে পড়েছে ওখানে বসবাস করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৬ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬৩ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার চিলমারী, উলিপুর, রৌমারী, রাজিবপুর, সদর, নাগেশ্বরী উপজেলাসহ নয় উপজেলার ৫১ ইউনিয়নের প্রায় দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দী জীবন যাপন করছে। বন্যাকবলিত এলাকায় একধরনের ঘরবন্দী আর অনিশ্চিত জীবনযাপন করছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী। এরমধ্যে শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস। কিন্তু এ পরিস্থিতিতে ওইসব এলাকার শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা এবং চলমান অনলাইন ক্লাসের উপর একধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

বন্যাকবলিত এলাকার জবি শিক্ষার্থীরা কি ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে তাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কথা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রোকনুজ্জামান সাতক্ষীরার প্রতাপনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা, তিনি জানান,সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের হাজারো মানুষ নদীর জোয়ার ভাটার কবলে বন্দী। দূর্বিষহ জীবন যাপনের মধ্যে কাটছে দৈনন্দিন হাজারো মানুষের। তবে থেমে নেই। এগিয়ে চলেছে সবাই আপন গতিতে। কারণ সবাইকে তো বেঁচে থাকতে হবে। জীবন সংগ্রামের সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে আছে এখনো অত্র ইউনিয়নের হাজারো মানুষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ফরহাদ রেজা কুড়িগ্রামের বাসিন্দা, তিনি বলেন,বন্যার কারনে আমাদের কুড়িগ্রাম জেলার বেশিরভাগ অঞ্চলই প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে রৌমারী, রাজিবপুর, চিলমারী, রাজারহাট, উলিপুর, ভুরুঙ্গামারী উপজেলার প্রায় ৭০ শতাংশ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বন্যা রোধের জন্য নির্মানকৃত বাঁধ পুরোপুরি ভেঙে গিয়ে আশেপাশের  সমস্ত এলাকা তলিয়ে গেছে। রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়ে সব রকম যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অনেক গবাদি পশু মারা যাচ্ছে। এসব কারণে যেকোন সময়ে পানিবাহিত নানা রোগের সৃষ্টি হতে পারে। নিজ এলাকায় এমন দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা সৃষ্টি হওয়ায় আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যাঘাত ঘটছে ও পড়ালেখার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। দুঃস্থ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী প্রশাসন থেকে যেই সাহায্য পাচ্ছে তা কেবল নামেমাত্র। আদম তমিজি হক তার মানবিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, যদিও তা যথেষ্ট নয়।

এসব অঞ্চলে পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহ করা এবং পানি বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিত। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি রোধে স্থায়ী ভাবে টেকসই বাঁধের ব্যবস্থা করতে হবে।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যান এর পরিচালক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকির সাথে মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে জানি না। পিআরও এর সাথে যোগাযোগ করুন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *