ভারতের সীমান্তে আবারও উত্তেজনা, ক্ষেপণাস্ত্র বসাচ্ছে চীন

ছবি: সংগৃহিত

চীন-ভারত-নেপালের বিতর্কিত লিপুলেখ ট্রাই জংশন এলাকায় মানস সরোবর হৃদের কাছে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা নির্মাণ করছে চীন। স্যাটেলাইটে পাওয়া ওই এলাকার নতুন চিত্র বিশ্লেষণে সেখানে সৈন্য বৃদ্ধির পাশাপাশি ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনার কাজ চলছে বলে ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হচ্ছে।

লিপুলেখ এলাকা নিয়ে ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলে আসছে নেপালের। কিছুদিন আগে কালাপানি, লিম্পুয়াধুরার সঙ্গে উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ এলাকা নিজেদের বলে দাবি করে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে নেপাল। এবার এই বিতর্কের মাঝেই লিপুলেখে নিজেদের সেনাবাহিনীর সংখ্যা বাড়াচ্ছে চীন।

স্যাটেলাইটে পাওয়া চিত্র প্রকাশ করে ভারতীয় একটি সংস্থার দাবি, লিপুলেখের ট্রাই জংশন এলাকায় সেনা মোতায়েন করার পাশাপাশি ক্ষেপণাস্ত্র বসানোর জন্য নির্মাণকাজ শুরু করেছে চীন। লিপুলেখ এলাকায় ভারত, নেপাল এবং চীনের সীমান্ত রয়েছে। গত মে মাস থেকেই চীন এ এলাকায় অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরু করে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, গত কয়েক সপ্তাহে ধীরে ধীরে সেখানে সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে দেশটি। ইতোমধ্যে সেখানে চীন এক হাজার সেনা মোতায়েন করেছে বলে স্যাটেলাইট চিত্রে ধরা পড়েছে।

গত ৮ মে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ পাসের সঙ্গে কৈলাশের মানস সরোবর এলাকার মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী একটি নতুন সড়কের উদ্বোধন করেন। নেপাল এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে সেখানে একটি নিরাপত্তা চৌকি বসানোর ঘোষণা দেয়। বিতর্কিত এই এলাকায় ভারতের ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রাস্তা নিয়ে আপত্তি জানায় প্রতিবেশি নেপাল।

প্রতিবেশি এ দুই দেশের অমীমাংসিত ভূখণ্ড কালাপানিতে ভারতের সড়ক নির্মাণ ঘিরে বেশ কিছুদিন ধরে উত্তেজনা দেখা দেয়। নেপাল কালাপানিকে নিজ দেশের ভূখণ্ড হিসেবে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে দেশটির সংসদে দেয়া ভাষণে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি অলি বলেন, কালাপানি-লিমপিয়াধুরা-লিপুলেখ এলাকাকে যেকোনও মূল্যে ফিরিয়ে আনবে নেপাল। বিতর্কিত এই এলাকাকে নিজেদের বলে দাবি করে আসছে ভারত।

ভারত এবং নেপালের উন্মুক্ত সীমান্ত রয়েছে প্রায় এক হাজার ৮০০ কিলোমিটার। ১৯৬২ সালে চীন-ভারত যুদ্ধের পর থেকে কালাপানি-লিমপিয়াধুরা এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন রেখেছে নয়াদিল্লি। কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকাকে নিজ ভূখণ্ড বলে দাবি করছে নেপাল।

পরে ওই তিন এলাকা অর্থাৎ লিপুলেখ, লিম্পুয়াধুরা এবং কালাপানিকে নিজেদের বলে দাবি করে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করে নেপাল। এবার বিতর্কিত এই ট্রাই জংশনে সেনা সদস্য বৃদ্ধি এবং ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা নির্মাণ করায় চীনের সঙ্গে ভারতের নতুন উত্তেজনা তৈরি হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *