‘মধুর চেয়েও আছে মধুর
সে এই আমার দেশের মাটি,
আমার দেশের পথের ধুলা
খাঁটি সোনার চাইতে খাঁটি!’
সত্যিই তাই, আমার দেশের মাটি সোনার চাইতেও খাঁটি।
মাটির কথা বলতেই ‘সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের’ কবিতার কথা মনে পরে যায়।
মাটি শব্দটির মাঝে এক অদৃশ্য মমতার ছোঁয়া লুকিয়ে আছে, মিশে আছে অনাবিল প্রশান্তির পরশ। তাই তো মাটিকে ভালোবেসে মাটির কাছেই ফিরে আসি বারে বারে।
৫ ডিসেম্বর বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস। ‘কিপ সয়েল অ্যালাইভ, প্রটেক্ট সয়েল বায়োডাইভারসিটি– মাটি বাঁচিয়ে রাখুন, মাটির জীববৈচিত্র্য রক্ষা করুন’এই স্লোগান সামনে রেখে বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস। এ উপলক্ষে বাংলাদেশেও নানারকম কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে।
কিন্তু এই লোক দেখানো দিবস পালন করে কতোটা লাভ হচ্ছে বা ভবিষ্যতে কতোটা লাভ হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়!
২০০২ সালে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস পালনের প্রস্তাব উত্থাপন করে মৃত্তিকা বিজ্ঞানের আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন (আইইউএসএস)। পরে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য সংস্থার অনুমোদন লাভের পর প্রতি বছর ৫ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হয়।
তার মানে গত দেড় যুগের অধিক সময় যাবত এই দিবস পালিত হচ্ছে, কিন্তু ধরণি কি এর সুফল পাচ্ছে? উত্তরটা পেতে কারো কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, আপনার চারপাশে তাকান উত্তর পেয়ে যাবেন।
আমরা নিজেরা মৃত্তিকা দিবস উপলক্ষে মাটিকে ভালোবাসার অভিনয় করে সুশীল সমাজের তকমা নিচ্ছি, আবার সেই আমরাই বনভূমি ধ্বংস করে রিসোর্ট বানাচ্ছি, বড় বড় কথা বলে গলা শুকালে ঠাণ্ডা পানীয় খেয়ে বোতলটা ছুড়ে ফেলছি। এই হচ্ছে মৃত্তিকার প্রতি আমাদের ভালোবাসা! আরও পড়তে পারেনডাকছে প্রকৃতি! শুনেছো কি?
দেশে প্রতি বছর প্রায় ৩% করে বনভূমি বিনাশ হচ্ছে যা ব্যাপকভাবে ভূমি ক্ষয়ের কারণ এবং বাংলা পিডিয়ার তথ্য মতে এভাবে মৃত্তিকা ক্ষয়ের পরিমান বছরে ১০২ টন/হেক্টর। এছাড়া এদেশের পাহাড়ি অঞ্চল যেখানে জুম চাষ হয়ে থাকে সেখানেও মৃত্তিকা ক্ষয় এর পরিমান স্বাভাবিক এর চেয়ে অনেক বেশি (বছরে ৭-১২০ টন/হেক্টর)।
তাহলে প্রতিবছর এই দিবস পালন করে কি লাভটা হচ্ছে? নিঃসন্দেহে বলা যায় কোন সুফল হচ্ছে না।
আমরা আসলেই যদি মাটিকে ভালোবাসি, ধরণিকে ভালোবাসি, তাহলে বছরেই প্রতিদিনই অবনির যত্নে কাজ করতে পারি, ৫ ডিসেম্বর বিশ্ব মৃত্তিকা দিবসের জন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন হবে না।